মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন আমার ধর্ম আমার, তোমার ধর্ম তোমার। অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে স্বাধীনভাবে পালন করবে। রাষ্ট্র তাতে কোন প্রকার বাঁধা দিবে না। দেশের প্রতিটি নাগরিক সমান অধিকার ভোগ করবে। তার কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। দেশনেত্রী আজ দেশের জন্য শুধু পদ্মা সেতু নির্মাণ নয়, তিনি ১০টাকা মূল্যের ভিজিএফ’র চাল, কর্ণফুলি ট্যানেল নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি উপস্থিত পূন্যার্থীসহ সকলের কাছে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়েছেন।
শুক্রবার শহরের গাজীপুর প্রেসক্লাবের সামনে বটমূলে শ্রীশ্রী মাণিক্য মাধবের রথযাত্রা ও রথমেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার এসএম সফিউল্লাহ, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হাসান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুল হাদী শামীম, মনীন্দ্র চন্দ্র মন্ডল প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গাজীপুর রথমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মুকুল কুমার মল্লিক।
মন্ত্রী বেদখল হওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার করে তাতে রথমেলা ও রথযাত্রার জন্য জমির পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমাদের গাজীপুর মহানগরীকে বাঁচাতে হবে। এখানে শিশুপার্ক নেই, জিমনেসিয়াম নেই, সুইমিংপুল নেই, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নির্মাণের জন্যও জমি প্রয়োজন। তিনি গাজীপুর শহরে ভাওয়াল কোর্ট অব এ্যাওয়ার্ডসের যে জায়গা আছে তা পরিকল্পিতভাবে ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসক ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অনুরোধ করেন।
রথযাত্রা উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা শেষে প্রধান অতিথি পূণ্যার্থীদের নিয়ে রথ টেনে রথযাত্রা ও রথমেলার উদ্বোধন করেন। এরআগে পালকি সহযোগে দেবতা মাণিক্য মাধবকে রথে অধিষ্ঠান করানো হয়। শুক্রবার রথ টানের মধ্য দিয়ে মাণিক্য মাধব নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছেন। আগামী শনিবার (৯ জুলাই) উল্টো রথযাত্রায় মাণিক্যমাধবের নিজ বাড়ি ফেরার মধ্য দিয়ে এবারের ৯ দিনব্যাপী রথযাত্রার শেষ হবে। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ২০ দিনব্যাপী রথমেলা শুরু হয়েছে। মেলায় শিশুদের খেলনা, মিষ্টির দোকান, তৈজষপত্র, আসবাবপত্রসহ নানা বাহারী সব জিনিসের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানীরা। এছাড়াও মনোরঞ্জনের জন্য মেলায় এসেছে নাগরদোলা ও সার্কাস ইত্যাদি। রথমেলায় হাজারো পূণ্যার্থী এবং সকল ধর্মের মানুষেরা অংশ নিচ্ছেন। প্রায় দেড়শো বছর পূর্বে গাজীপুরের ভাওয়াল রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এই ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী মাণিক্য মাধবের রথযাত্রা ও রথমেলার প্রচলন করেন।
