জাতীয়

১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করবেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী

আলেম-ওলামা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, আজকে আমাদের একটা মাত্র দাবি দুই দিনের মধ্যে সকল আলেম, সকল রাজনৈতিক কর্মী ও বেগম খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় আপনারা তৈরি হন, ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করবো। ওদের জামিন ছাড়া এবার হাইকোর্টে কোনো জামাত হবে না।

রোববার (৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী একথা বলেন।

‘হয়রানিমূলক মামলায় রাজবনন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের দীর্ঘ কারাবাস, নাগরিক সমাজের উদ্বেগ’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে গণ মতামত কেন্দ্র।

কারাবন্দি হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ আলেম ওলামাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে ডা: জাফরুল্লাহ বলেন, ‘মামুনুল হকের আইনি অধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তার পরিবারকে গত ১৫ মাসে একবার দেখা করতে দেয়া হয়েছে। মামুনুল হকসহ অন্য আলেমদের তাদের পরিবারের সাথে দেখা করতে না দেয়া জালেমের কাজ।’

তিনি বলেন, হাজী সেলিমকে প্যারলে মুক্তি দিতে পারেন কিন্তু খালেদা জিয়াকে পদ্মা ব্রিজ দেখতে দিতে পারেন না। তাহলে আপনাদের বিচার কোথায়?

বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি কোনো ব্যক্তির চাকর না। আপনি জনগণের খাদেম।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানকে ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডের পাথর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। গত ৫০টি বছরে এ সংবিধানে এতো বেশি কাটাছেঁড়া হয়েছে যে মানুষের মনের চাহিদা, আইনের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না।

একটাই রাস্তা আছে, হয় সংবিধানকে সংশোধন করো অথবা পুনরায় আগের জায়গায় নিয়ে যাও অথবা নতুন করে সংবিধান রচনা করো।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধানের বাইরে এক পা যাবো না। এক চুলও যাবো না। শক্তি ব্যতিত বিএনপি আমলে দাবি আদায় হয়নি। এখনও হবে না।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি আলেম- ওলামাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এই মুক্তির জন্য লড়াইকে যতোদূর নেয়া উচিত আমি ততোদূর পর্যন্ত এই দলে যেতেও রাজি আছি। আমি যাদেরকে যাদেরকে পাবো তাদের নিয়েই এই লড়াই করতে চাই।

তিনি বলেন, যিনি দিনের ভোট আগের রাতে ডাকাতি করছেন, এটা কি ইসলামের পক্ষের কাজ? এর চেয়ে ইসলামবিরোধী কাজ কী হতে পারে। যিনি এই ইসলামবিরোধী কাজ করছেন, তাকে আবার আপনারা অনুরোধ করবেন- আপনি যদি ইসলামের পক্ষে থাকেন তাহলে দুই শ’ বছর ক্ষমতায় থাকেন- আমি এর পক্ষে নেই।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এ সরকারের সাথে ন্যূনতম আপোসের চিন্তা করে যারা যেকোনো আন্দোলন করছেন- তার সাথে আমি নাই। আমি মনে করি এরা শুধু ভোটচোর ভোট ডাকাত তা নয়, এরা বড় প্রতারক, মিথ্যুক। এদের কোনো ধর্ম নেই। এরা সবচাইতে বেশি ধর্মকে ব্যবহার করেছে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, আমার দৃষ্টিতে সরকার সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি না থাকার কারণে তারা রিলাক্সে পার পেয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আলেম-ওলামা বা সাধারণ মানুষ বলেন, আগামীতে যখন ডাক আসবে পরিস্থিতি তৈরি হবে, আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে থাকবো।

গণমতামত কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও সমন্বয়ক মোহাম্মদ শামসউদ্দিনের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, এলডিপি এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাংবাদিক নেতা বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিপ্লব কুমার পোদ্দার, গণমতামত কেন্দ্রের সমন্বয়ক মোর্শেদ সিদ্দকী প্রমুখ।