জাতীয়

জাবিতে সাংবাদিক নির্যাতনকারীদের নাম জানাল ছাত্রলীগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কর্মরত এক গণমাধ্যমকর্মীকে ‘গেস্ট রুমে’ ডেকে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতনকারীদের নাম জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। নির্যাতিত সাংবাদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্রলীগ কর্মীকে নির্যাতনকারী হিসেবে দাবি করেন ওই সাংবাদিক।

রাতেই প্রত্যক্ষদর্শীরা এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, রুম থেকে ডেকে এনে নিজের ও বন্ধুদের পরিচয় দিতে বলা হয় ওই সাংবাদিককে। পরিচয়পর্ব শেষে রুমের সিলিং ধরে নির্দিষ্ট সময় ঝুলে থাকতে বলা হয়। সময় শেষ হওয়ার আগেই ওই সাংবাদিক নেমে যান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে টেবিলের নিচে মাথা দিতে বলা হয়। এতে অপারগ হলে নির্যাতনকারীরা আরও রেগে যান।

নির্যাতিত শিক্ষার্থী বলেন, রুম থেকে গেস্ট রুমে ডেকে নিয়ে আমাকে ঝোলানো হয়, টেবিলের নিচে মাথা দিতে বলা হয়। আমি বাধ্য হয়ে ঝুলেছি কিন্তু টেবিলের নিচে মাথা দিতে পারিনি। তারা আমাকে মোবাইলের লক খুলে দিতে বললে আমি অস্বীকৃতি জানাই। এতে আমার শার্টের কলার ধরে আক্রমণ করে। আমার মোবাইল তারা অনেকক্ষণ আটকে রাখে।

এ ঘটনার পরপরই সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। সেখানে নির্যাতিত ও নির্যাতনকারী দাবি করা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল প্রাথমিকভাবে ‘ক্রস চেক’ করে কিছু নাম ঘোষণা করেন। তারা হলেন- ৪৬ তম ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের আসাদ হক ও আরিফ জামান সেজান, ৪৭ তম ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের জিয়াদ মির্জা, দর্শন বিভাগের হাসিবুল হাসান রিশাদ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের রাইহান বিন হাবিব, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মুনতাসির আহমেদ তাহরীম, আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ্ এবং ৪৮ তম ব্যাচের রসায়ন বিভাগের জাহিদ হাসান।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক জানান, নির্যাতনকারীদেরকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আজ থেকে এই কর্মীরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকুক এটা আমরা চাই না। সাংগঠনিক কাজকর্ম থেকে তারা অবাঞ্ছিত বলে গণ্য হবে। পরবর্তীতে তারা এই কমিটি থাকা অবস্থায় রাজনীতির সাথে কোনোভাবে যুক্ত থাকবে না এবং আগামী কমিটিতেও তাদের থাকার কোনো সুযোগ নেই।

সংবাদকর্মীকে নির্যাতন ও পরের প্রায় তিন ঘণ্টায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রভোস্ট, ওয়ার্ডেন, আবাসিক শিক্ষক এবং সহকারী আবাসিক শিক্ষককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কল দিলেও রিসিভ করেননি তারা।