গাজীপুরে চলন্ত ট্রেনের বগি যাত্রীসহ লাইনচ্যুত হয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার ১১ ঘন্টা পর পুনঃরায় ট্রেন চলাচল শুরু করেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রডগেজ লাইনের মেরামত কাজ সোমবার বিকেলে সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় রেলওয়ের ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন ফাঁড়ির এসআই শহীদুল্লাহ ও যাত্রীরা জানান, রবিবার রাতে যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে ট্রেনটি গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম রেল স্টেশন অতিক্রম করার পর পরই (স্টেশনের উত্তর পাশে) মাঝখান থেকে ট্রেনের চারটি বগি ঘ, ঙ, চ ও ছ লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এরমধ্যে ‘চ’ বগিটি লাইনচ্যুত হয়ে মাটিতে সম্পূর্ণ কাত হয়ে পড়ে। এসময় অপর ৩টি আংশিক কাত হয়ে যায়। ট্রেনের চালক দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত ট্রেনটি থামাতে সক্ষম হন। এসময় যাত্রীরা আতংকিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। এঘটনায় অন্ততঃ ১৫/১৬ জন যাত্রী আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ, জিএমপি’র সদর থানার পুলিশ ও জয়দেবপুুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং উদ্ধার কাজ শুরু করেন।
রেলওয়ের জয়দেবপুর জংশনের স্টেশন মাস্টার রেজাউল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, জামালপুর ও ময়মনসিংহ রুটসহ উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে রেললাইন ও ট্রেনের বগি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এঘটনার পর বিভিন্ন স্টেশনে একাধিক ট্রেন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে রাতে ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। দূর্ঘটনা কবলিত বগিগুলো রেললাইন থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে প্রায় ১১ ঘন্টা পর সোমবার সকাল ৮টা থেকে ওই রুটের মিটার গেজ লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে বিকেল ৩টার দিকে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রডগেজ লাইনের মেরামত কাজ শেষ হয়। তিনি জানান, চালকের দক্ষতার কারণে ট্রেনটি বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এতে নিহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা ডিভিশনাল ম্যানেজার মো. সফিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় রেলওয়ের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. খায়রুল কবিরকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, রবিবার রাতে ট্রেন দূর্ঘটনায় আহত ১৫জনকে এ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। অবশিষ্ট আহত দুই পুরুষ ও এক নারী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে তারা শঙ্কামুক্ত।