আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ দেশের মানুষ জ্বলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিএনপির আয়োজনে ‘দুর্নীতি জ্বালানি সংকটের উৎস’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলের পক্ষ থেকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ছোটবেলায় আমাদের মায়েরা গান শোনাতো ‘খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বর্গী এলো দেশে।’ আজকে এই সরকার বর্গীদের ভূমিকা পালন করছে। এখন আমাদের বাচ্চাদের ঘুম পারাতে হবে ‘আওয়ামী লীগ এলো দেশে’ এই কথা বলে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার দেশকে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। কোথাও কথা বলতে পারবেন না, লিখতে পারবেন না, কোথাও যেতে পারবেন না।
একধাপে জ্বালানি তেলের দাম ৫১ শতাংশ বাড়ানোর পরিবর্তে সরকারের অন্য বিকল্প পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল- সরকারকে এমন পরামর্শ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, গভীর রাতে জ্বালানির দাম ব্যাপকভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অর্থনীতিকে সঙ্কটে ফেলেছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার জনকল্যাণের চেয়ে দলীয় ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেয়ায় সব খরচ চাপিয়ে দিয়ে জনগণকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এই দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা সরকারের অধীনে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা সম্ভব নয়। কারণ তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধের ওপর বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মঈন খান।
তিনি বলেন, বিশ্বের যেকোনো দেশের সরকার ধনীদের থেকে গরিবদের প্রতি বেশি মনোযোগী থাকে। গরিবরা যেন সমাজে একটা সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে পারে তারা সেটা নিশ্চিত করে। এবং এই দায়িত্বটা পালন করাই হলো সরকারের কাজ। বাংলাদেশে এটার উল্টোটা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব বাজারের মূল্য অনুযায়ী বাংলাদেশের বাজারে জ্বালানি তেলের যে রিটেইল প্রাইস, সেখানে সমস্ত ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করে দাম সমন্বয় করলে তেলের দাম শতকরা আট শতাংশ কমতে পারে। ৫১ শতাংশ বাড়তে পারে না। তাহলে যেটা দাঁড়াচ্ছে সেটা হলো, সরকার অন্যায়ভাবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করেছে সত্যিকারার্থে ৫৯ শতাংশ; ৫১ শতাংশ নয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নীতিমালা তৈরি করেছে। যেখানে জ্বালানি ও বিদ্যুতকে রাজনৈতিক পণ্য বানিয়েছে। তারা জ্বলানি তেলের মূল্য বাজারভিত্তিক নির্ধারণ না করে পলিটিক্যালি নির্ধারণ করেছে। এটা এখন পলিটিক্যাল কম্যুডিটি হয়ে গেছে।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাকির হোসাইন খান প্রমুখ।