পঞ্চগড় ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে থাকা মো. সুজন (২৫) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে উপজেলা সদরের ৩ নং পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদের একটি রুমে এই ঘটনা ঘটে। সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মো. সুজন উপজেলা সদরের পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া এলাকার মৃত কছিম উদ্দীনের ছেলে। স্থানীয়দের দাবি, সুজন মাদকাসক্ত ও ছিঁচকে চোর ছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, সুজন একাধিকবার ছোটখাট চুরি করতে গিয়ে ধরা পরেছেন। বুধবার রাতে স্থানীয় একটি মসজিদের ব্যাটারি চুরির অভিযোগে স্থানীয় লোকজনসহ ইউপি চেয়ারম্যান আল ইমরান খান তাকে আটক করে। এ সময় সুজন স্থানীয় জাহেদুল হকসহ মসজিদের ব্যাটারি চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেন এবং সকালে চুরি করা ব্যাটারি উদ্ধার করে দিবেন বলেও জানান। পরে রাত দুইটার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ গিয়ে জাহেদুলকেও আটক করে ইউনিয়ন পরিষদের পৃথক দুইটি কক্ষে দুইজনকে আটকে রাখে। তাদের পাহারায় রাখা হয় ইউপি কার্যালয়ের দফাদার জামিরুল ইসলামকে । সকালে দফাদার জামিরুল তাদের জন্য নাশতা নিয়ে গিয়ে ডাকতে গেলে একটি ঘরে সুজনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
সুজনের শ্বশুর মো. চাঁন মিয়া বলেন, জামাতার বাবা নেই। আমরাই তার অভিভাবক। কি ভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে এখনো বলতে পারছি না। সকাল থেকে মরদেহ নিয়ে ছুটোছুটি করছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ নিয়ে দাফন করা হবে। মামলা বা অভিযোগের বিষয়ের এখনও কোন চিন্তা করিনি। পরিবারের সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান তিনি।
পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ইমরান খান জানান, রাতে আটকের পর ওই দুই জন মসজিদের চুরি হওয়া ব্যাটারি সকালে উদ্ধার করে দিতে চেয়েছিলেন। তারা মসজিদের লোকজনের কাছে ক্ষমাও চান।
চেয়ারম্যান বলেন, সুজন আমার নিকটতম প্রতিবেশি এবং আমার জমিতেই সে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। চুরি এবং মাদকের বিষয় তাকে একাধিকবার ধরে বুঝিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সকালে ব্যাটারি উদ্ধার শেষে শালিশ বৈঠকের পর তাদের পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। মুলত চুরি হওয়া ব্যাটারি সকালে উদ্ধারের জন্যই তাদের রাতে আটকে রাখা হয়। কিন্তু রাতেই তার কাছে থাকা গামছা জাতীয় কাপড় দিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
সদর থানা পুলিশের ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ওই ঘরের সামনে মাদক গ্রহনের একটি সিরিঞ্জ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত আরেক চোরকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। যদি কোন অভিযোগ থাকে সেক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।