স্কোরবোর্ডে সংগ্রহ ছিল ১২৭/৭, খুবই কম রান। এতো কম রানেও ম্যাচে জয়ের দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। শেষদিকের বোলিং ব্যর্থতায় আফগানিস্তানের কাছে হেরেছে টাইগাররা। শেষ রক্ষা হলো না। যদিও ১২৭ রানে হারবে এটা তো জানা বিষয়।
আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৭ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় আফগানিস্তান। বাকি ছিল আরো ৯ বল। আফগানদের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও হজরতউল্লাহ জাজাই। সাকিবের করা দ্বিতীয় ওভারেই ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন গুরবাজ। কিন্তু সেটা তালুবন্দী করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
অবশ্য টাইগারদের বেশিক্ষণ হতাশায় রাখেননি দলপতি সাকিব আল হাসান। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই গুরবাজকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। আফগান ওপেনার করেন ১১ রান। শুরুতেই উইকেট হারানোর পর দেখেশুনে খেলতে থাকেন জাজাই ও ইব্রাহিম জাদরান। দুজনে গড়েন ৩০ রানের জুটি। জাজাইকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মোসাদ্দেক সৈকত। এরপর ক্রমেই আফগানদের ওপর চাপ বাড়াতে থাকে টাইগার বোলাররা।
দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা সাইফউদ্দিন ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারে বোলিংয়ে আসেন। নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ নবীকে আউট করেন তিনি। এ অবস্থায় ম্যাচ অনেকটাই বাংলাদেশের দিকে হেলে পড়ে।
কিন্তু এখান থেকেই পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন ইব্রাহিম ও নাজিবুল্লাহ জাদরান। শেষদিকে নিয়মিত বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন তারা। বলা যায় বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে আনেন তারা। আফগানদের জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন নাজিবুল্লাহ। তিনি মাত্র ১৭ বলে ৪৩ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন। অন্যপ্রান্তে ৪১ বলে ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন ইব্রাহিম। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব, মোসাদ্দেক ও সাইফউদ্দিন একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয়। নিজের প্রথম ওভারেই নাঈমকে ফেরান মুজিব উর রহমান। বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেন ৬ রান।
এরপর পাওয়ার প্লে-তে নিজের পরের দুই ওভারে আরো দুইবার আঘাত হানেন মুজিব। তার বলে লেগ বিফোর হয়ে বিজয় ৫ ও বোল্ড হওয়ার আগে সাকিব করেন ৯ রান। পাওয়ার প্লে শেষ হতে আক্রমণে আসেন রশিদ খান। এসেই তিনি সাজঘরে ফেরান মুশফিকুর রহিমকে।
মাত্র ২৮ রানে চার উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। দুজনের ২৫ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয় বাংলাদেশ। ১২ রানে আফিফ ফিরলে ফের বেকায়দায় পড়ে টাইগাররা।
বিপদ আরো ঘনীভূত হয় যখন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এসেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন। তবে ভাগ্যের শেষ সুযোগ হিসেবেই হয়তো সে যাত্রায় কোনোক্রমে জীবন পান সৈকত। ফিল্ডারের পা সামান্য ছোঁয়া লাগে বাউন্ডারি কুশনে, ফলে দারুণ ক্যাচটি পরিণত হয় ছয়ে।
এরপর থেকেই দেখেশুনে খেলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন রিয়াদ ও সৈকত। দুজনে মিলে গড়েন ৩৬ রানের জুটি। ২৭ বলে ২৫ রানে আউট হন রিয়াদ। টাইগারদের হয়ে বাকি সময় একাই লড়াই করেন সৈকত। তিনি ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষদিকে ১২ বলে ১৪ রান করেন মাহেদি। মুজিব ও রশিদ দুজনেই তিনটি করে উইকেট শিকার করেন।