সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মাটিকোড়া গ্রামে বজ্রপাতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত আরও ২ জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ জানান, বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ধানক্ষেতে কাজ করছিলেন কৃষকরা। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে সবাই মাঠের মধ্যে অবস্থিত একটি শ্যালোমেশিনের ঘরে গিয়ে ওঠেন ১৩ জন। এসময় ওই ঘরের ওপর একের পর এক বজ্রপাত হয়।
হঠাৎ তাদের চিৎকার শুনে ও মেশিনঘরে ধোঁয়া দেখে গ্রামবাসী ছুটে গিয়ে দেখে ঘটনাস্থলেই ৫ জন মারা গেছেন। বাকিরা ছিটকে পড়ে আছে। এমন অবস্থায় গ্রামবাসী ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। তারা এসে আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান ২ জন, পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান আরও ৩জন। আহত বাকি দুজনের অবস্থিও অনেকটাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।
প্রত্যক্ষদর্শী রিয়াদ হোসেন জানান, বৃষ্টি শুরু হলে তিনি পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে আমরা চিৎকার শুনে শ্যালো মেশিন ঘরের দিকে দৌড়ে যাই। দখন দেখি মেশিন ঘর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কাছে গিয়ে দেখি একজন আরেক জনের ওপর পড়ে আছে। এসময় আমাদের চিৎকারে গ্রামের আরও মানুষ ছুটে আসে। উদ্ধার করার সময় দেখি ৫ জন মারা গেছেন।
ভ্যানচালক সেলিম রেজা বলেন, বৃষ্টির মধ্যে বিকট চিৎকার শুনে আমিও ছুটে আসি। এসে দেখি ৫ জন মারা গেছেন। ‘বাকিরাও কথা কয় না। তাড়াতাড়ি আমার ভ্যানে চারজনকে নিয়ে হাসপালের দিকে রওনা হই। রাস্তায় আরও দুইজন মারা যায়। আমি আর কিছু কইতে পারমু না ভাই।’
উল্লাপাড়া ৩০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাবেয়া খাতুন বলেন, বিকেলে বজ্রাহত ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসা শুরু করতেই তাদের মধ্যে ৩ জন মারা যান। বাকি দুজনের চিকিৎসা চলছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হতে পারে বলেও জানালেন এই চিকিৎসক।
উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন জানান, জাতীয় সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত দেখানে গিয়ে ৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তারা। বাকিদেরও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে ফায়ার সার্ভিস। নিহদের লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানালেন উল্লাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জন নিহত হওয়ার খবর জানালেন তিনি।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন জানালেন, এই দুর্ঘটনায় মর্মাহত তিনি। মৃতদেহগুলো দাফনের জন্য প্রতি পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা দেয়া হবে। এছাড়াও দাফন না হওয়া পর্যন্ত সকল কাজে তাদের সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিলেন তিনি।