বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গিয়ে কোনো কিছুই আনতে পারেননি। আমরা (বিএনপি) আশা করেছিলাম তিনি সেখানে গিয়ে দেশের প্রধান যে সমস্যা তিস্তার পানি, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা, সীমান্তে মানুষ হত্যাসহ বিদ্যমান সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলবেন। বরং দেখেছি গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি সুস্পষ্টভাবে কোনো কিছুই বলেননি। তিনি কী কী নিয়ে এসেছেন ভারতের কাছ থেকে, দেশের মানুষ তা জানতে চায়।
বুধবার বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ে তার পৈতৃক বাসভবনে ভারত সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর পরেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন।
বিএনপির বর্তমানে কোনো নেতা নেই- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, উনি যদি এ কথা বলে থাকেন তাহলে তা তার অভিজ্ঞতা থেকে নয়। বিএনপির নেতা আছে বলেই তো তারা বিএনপিকে এত ভয় পাচ্ছে। নেতা আছে বলেই তো আজকে বিএনপি উঠে দাঁড়াচ্ছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সুসংগঠিত। বিএনপি এখন উঠে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বে ৩৫টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনে নিবে বলে জানিয়ে দিলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন হবে বিএনপি তারেক রহমানের নেতৃত্বেই সেই আন্দোলন সফল করবে। বিএনপি বলে আসছে আমাদের নেতা হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। তার অবর্তমানে তারেক রহমানের নেতৃত্বেই চলবে দলটি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল। সন্ত্রাস করেই তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, এ সরকার আসার পর থেকে তারা নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কোনো নির্বাচনে তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীকে দেখতে চায় না। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী যদি থাকেই থাকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে তাকে কি করে পরাজয় করে টিকে থাকা যায় সেই চেষ্টায় করে শাসক দলটি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাফ কথা জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই এই সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশের মানুষ কোনো নির্বাচনে যাবেও না।
কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।
নির্বাচন সম্পর্কে রোডম্যাপ নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মানে না, তাহলে রোডম্যাপ দিয়ে কি হবে? সারা দেশে আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। ঢাকা মহানগরে জোনভিত্তিক শুরু হয়েছে। পরে দেশব্যাপী হবে। এখনকার নির্বাচন সম্পর্কে কোনো বক্তব্য নেই। যতক্ষণ না নির্বাচনকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত না হয়। আসন্ন নির্বাচনের ব্যাপারে কে প্রার্থী দিল, কে প্রার্থী দিল না সে ব্যাপারে আমাদের কিছুই বলার নাই। তবে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলেছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি নূর করিম, মমিনুল হক বাবু, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ,জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক, জেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাফরুল্লাহ, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ আলম লাবুসহ বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।