অবশেষে ভারত-চীনের মতের মিলের একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এর বড় প্রমাণ পূর্ব লাদাখের বিতর্কিত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ করেছে ভারত ও চীন। দুই দেশের চুক্তির ভিত্তিতে নির্ধারিত সময়সূচি মেনেই দুই দেশের সেনারা ওই এলাকা থেকে সরে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে নয়াদিল্লি।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সেনা প্রত্যাহার শেষ হয়েছে বলেও জানিয়েছে নয়াদিল্লি। এ পরিস্থিতি আরো এগিয়ে নিতে শিগগিরই দেশ দুটির প্রধানমন্ত্রী পর্যায়েও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ উদ্যোগের উপর ভর দিয়ে আগামী দিন গুলোতে এশিয়ার শক্তিধর এ দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকর সম্পর্কের বরফ গলবে কি না, তা নিয়েও চলছে বিস্তর আলোচনা। দুই দেশের আলোচনার দিকে নজর রেখেছে বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া।
পূর্ব লাদাখে বিতর্কিত অঞ্চলটিতে ২০২০ সালে সেনাদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের পর প্রবল উত্তেজনার মুখে সেনা মোতায়েন বাড়ায় ভারত ও চীন উভয়ই। একই বছরের ৫ মে পূর্ব লাদাখের প্যানগং লেক এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দেশ দুটির সেনারা।
সংঘর্ষের ওই ঘটনায় ভারতের ২০ সেনা নিহত হন। আর চীনের হতাহত সেনার সংখ্যা ছিল অন্তত ৪০। এরপর ওই এলাকায় প্রবল উত্তেজনার মধ্যে সেনা মোতায়েন বাড়াতে থাকে দুপক্ষই। সে সময় (২০২০)
ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব লাদাখের উত্তেজনা কমাতে গত দুই বছর ধরে দুই দেশের সেনাপর্যায়ে মোট ১৬টি বৈঠক হয়। সবশেষ গত জুলাই মাসে দুপক্ষের প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে অঞ্চলটি থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এরপর গত সপ্তাহেই এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ হবে। এরই অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশেষে মঙ্গলবার দুই দেশের প্রতিনিধিদলের উপস্থিতিতে সেনা প্রত্যাহার শেষ হয়েছে। এ সঙ্গে সেনারা সরে আসায় দুপক্ষ যেসব অস্থায়ী ছাউনি বা কাঠামো তৈরি করেছিল, তা-ও ধারাবাহিকভাবে ভেঙে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশের শীর্ষ মহল।
সেনা প্রত্যাহারের এ প্রক্রিয়া এমন এক সময়ে সম্পন্ন হয়েছে, যখন উজবেকিস্তানে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যোগ দেয়া নিয়ে জোর প্রস্তুতি চলছে। মোদি আগামী সপ্তাহে ওই বৈঠকে যোগ দিলে তার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক হতে পারে বলেও তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তজার্তিক সংবাদ সংস্থাগুলো।