দেশবার্তা

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গোলাগুলি, ঘরবাড়ি ছাড়ছে লোকজন

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দৌছড়ি ইউনিয়নে বাহিরমাঠ এলাকায় মিয়ানমারে ওপারে প্রচন্ড গোলাগুলিতে শব্দে এপারের লোকজন আতঙ্কে আছেন। সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী অনেক লোকজন বাড়িঘর ছাড়ছেন।

রোববার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ির বাহির মাঠ এলাকার ৪৭-৪৯ পিলার পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মিয়ানমার সীমান্তের খুব কাছাকাছি বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করেন। ওই সীমান্তে ৪৬ পরিবারের বসতি রয়েছে বলে জানা গেছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বান্দরবানের সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ৪৭-৪৯ পিলার এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলিতে সীমান্তের লোকজন ভয়ে আছেন। যার ফলে সেখানকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেনে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সীমান্তের বাসিন্দাদের খোঁজ খবর রাখছি। ঘটনাগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করছি।

সীমান্তের গোলাগুলির বিষয়টি স্বীকার করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে ফের গোলাগুলির বিষয়টি শুনেছি। ওপারের প্রায় ৩০০ রাউন্ডের বেশি গোলাগুলি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সেখানকার মানুষের খোঁজ খবর রাখছি।

নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়াম্যান মংলাওয়াই মার্মা জানান, তার এলাকার চাকঢালা সীমান্তে মিয়ানমারে ব্যাপক গোলাগুলি শব্দ পাওয়া গেছে। এতে সীমান্তে ঘেঁষা ঝুঁকিতে থাকা ৩০ পরিবারকে সরিয়ে আনা হয়েছে। তাদের মধ্য অনেকে নিরাপদে থাকা স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।’

এদিকে তুমব্রুর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী প্রায় দুই মাসের কাছাকাছি ধরে মর্টারশেল-গোলাগুলি চলছিল। তবে বেশকিছু দিন ধরে এখন সেই সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে তুমব্রু সীমান্তের পর এবার বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়ির দৌছড়ি এলাকায় গোলাগুলি হওয়ায় সেখানকার লোকজন ভয়ভীতির মধ্য রয়েছে।

মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরেই রাখাইনদের সংগঠন আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বোমা বর্ষণ করছে। সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে প্রচণ্ডগোলাগুলি হচ্ছে। যার কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এরই মধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে একজনের প্রাণ গিয়েছে, অঙ্গহানি ঘটেছে দুজনের। গোলা বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন সীমান্তে শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া এক রোহিঙ্গা যুবক।

এ সব ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে বেশ কয়েকবার ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। এর মধ্যেই এবার দোছড়ি সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া গেল।