অপরাধ

মাছের ট্রাকে চুম্বক লাগিয়ে ইয়াবা পাচার,’গডফাদার’ গ্রেপ্তার

একসময় ক্রিকেট খেলতেন এরশাদুল হক। বিবিএ পাস করার পর তিনি নেমে পড়েন ব্যবসায়। কক্সবাজারের উখিয়ায় তার একাধিক মাছ চাষের প্রকল্প রয়েছে। তবে এই ব্যবসার আড়ালেই চলত তার ইয়াবার কারবার। মাছ পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকে বিশেষ কায়দায় চুম্বক ব্যবহারসহ নানা কৌশলে ঢাকায় পাঠাতেন ইয়াবার বড় চালান। এ কাজে তার একাধিক সহযোগী রয়েছে। এভাবে তিনি হয়ে ওঠেন টেকনাফকেন্দ্রিক ইয়াবা ব্যবসার অন্যতম গডফাদার।

রাজধানীর উত্তরা থেকে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ এরশাদুলকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার এসব তথ্য জানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিএনসির উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, এক মাস আগে আমরা এরশাদুলের ইয়াবা সিন্ডিকেট সম্পর্কে জানতে পারি। তার সঙ্গে সখ্য তৈরির জন্য আমরা সোর্স নিয়োগ করি। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার রমনা সার্কেলের পরিদর্শক তমিজ উদ্দিন মৃধা ক্রেতা সেজে ২ হাজার পিস ইয়াবা কেনার জন্য যান। তখন এই সিন্ডিকেটের সহযোগী সদস্য হুমায়ুনকে তার স্ত্রীসহ ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুলের অবস্থান জানা যায়। তারা জানায়, টেকনাফের মূল গডফাদার এরশাদুল ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে এরশাদুলকে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুল জানান, এই চালানের আগেও একাধিকবার ইয়াবার বড় চালান ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করেছেন।

ডিএনসির এই কর্মকর্তা জানান, নিজেকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রাখার জন্য এরশাদুল বিমানে যাতায়াত এবং যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপ ব্যবহার করতেন। তার মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে অনুসন্ধান করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, পাইকারি দরে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য নিজে মিয়ানমারে থাকা ডিলারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতেন এবং নৌপথে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য একাধিক রোহিঙ্গাকে ব্যবহার করতেন। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।