সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ‘মিথ্যা, গায়েবি মামলা, পুলিশি নির্যাতন ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে’ আগামী ৩০ নভেম্বর বুধবার ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভাগীয় সদরে (মহানগরগুলোতে) বিএনপি’র উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। তবে রাজশাহী ও কুমিল্লা বিভাগীয় সদর উক্ত কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের এলাকাবাসী, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দেশবাসী শঙ্কিত। একতরফা ও নিশিরাতের নির্বাচন করে আওয়ামী সরকার এখন আন্তর্জাতিকভাবেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তার কারণেই বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুখমণ্ডল ম্লান হয়েছে। বর্তমান বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে জনগণের যে নবতরঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে তা দেখে প্রধানমন্ত্রী আরও বেশি ক্রোধে-ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। জনতার এই উত্তাল ঢেউ দেখে শেখ হাসিনা শঙ্কিত হয়ে মনে করছেন-ঘুষ-দুর্নীতি-পুঁজি লুন্ঠনের যে অভয়ারণ্য তৈরি করেছেন বাংলাদেশে সেটি হয়তো হাতছাড়া হয়ে যাবে। সে কারণেই বিরোধী কর্মসূচিতে দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গেস্টাপো বাহিনীর মতো হত্যার লাইসেন্স দিয়ে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের প্রাণ হরণ করে গোটা জাতিকে খণ্ড-বিখণ্ড করেছে। দেশে চলছে এক ভয়াল নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক লক্ষ্য হচ্ছে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখা। তাই সহিংস সন্ত্রাসের ব্যাপক বিস্তার তাদের জন্য অপরিহার্য। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী দেশে-বিদেশে বিলাসী জীবন-যাপনকে নির্বিঘ্নে রাখতেই ক্ষমতার আড়ালে মহাদুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রকে কঙ্কালে পরিণত করে দেশ ও জনগণের ভবিষ্যতকে বরবাদ করার জন্যই চিরস্থায়ী ক্ষমতার বলয় তৈরির অপচেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। অবৈধ সরকারের রক্তচক্ষুর দানবীয় তাণ্ডবে বিরোধী দল, ভিন্ন মত, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানুষের মৌলিক অধিকার সবকিছুকেই ডাকাতি করা হয়েছে। শেখ হাসিনর উন্মাদ লীলায় গ্রামে-গঞ্জে-হাটে-ঘাটে-বন্দরে-বাজারে-শহরে লাশ পড়ছে, ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। ওঁৎ পেতে থাকা শিকারী বাঘিনীর মতো বিএনপি’র মিছিলের ওপর নির্দয় হৃদয়হীন পুলিশ গুলি চালিয়ে জীবন কেড়ে নিচ্ছে তরুণসহ বিভিন্ন বয়সী নেতাকর্মীদের।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজিম খান, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।