পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে ডাকা লংমার্চ বাতিল করেছেন। বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সেইসাথে আগাম নির্বাচনের দাবি জোরদার করার লক্ষ্যে প্রাদেশিক পরিষদগুলো থেকে তার দল পদত্যাগ করবে বলেও ঘোষণা করেছেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর কাছে গ্যারিসন নগরী রাওয়ালপিন্ডিতে এক সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ‘ইসলামাবাদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। কারণ সেখানে বিশৃঙ্খলা হবে, যা হবে দেশের ক্ষতি।’ হত্যাচেষ্টার পর এই প্রথম প্রকাশ্য কোনো সভায় বক্তৃতা করলেন ইমরান খান।
আলজাজিরার কামাল হায়দার ইসলামাবাদ থেকে বলেন, ইমরান খান আবেগপূর্ণভাবে তার সমর্থকদের বলেন যে পাকিস্তান অর্থনৈতিক সঙ্কটে থাকায় ‘বিশৃঙ্খলা’ দেশের স্বার্থে অনুকূল হবে না।
অনাস্থা ভোটে সরকার থেকে অপসারিত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আগাম নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করে যাচ্ছে। ইমরান দাবি করে আসছেন, মার্কিন-নেতৃত্বাধীন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে অপসারণ করা হয়েছে। অবশ্য চলতি মাসের প্রথম দিকে তিনি বড় ধরনের ইউ-টার্ন নিয়ে বলেছেন, তার বিদয়ের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ছিল না।
তার দলের বিক্ষোভ চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হতো ইসলামাবাদে।
কিন্তু তার আগেই তিনি লংমার্চ অবসানের ঘোষণা দিলেন। এছাড়া দুটি প্রাদেশিক পরিষদ এবং দুটি প্রশাসনিক ইউনিট থেকে তার দলের পদত্যাগের কথা ঘোষণাও বড় ধরনের বিষয়।
ইমরান খান বক্তৃতায় বলেন, ‘আমরা এই সিস্টেমের অংশ হতে চাই না। আমরা সকল পরিষদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই দুর্নীতিবাজ সিস্টেম থেকে বের হওয়ার জন্য।’
পিটিআই ইতোমধ্যেই ফেডারেল পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছে। তবে দুটি প্রদেশ এবং দুটি প্রশাসনিক ইউনিট- গিলগিট-বালিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মিরে ক্ষমতায় রয়েছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতা বলেন, সরকারকে আগাম নির্বাচনে চাপ দিতেই ইমরান খান পাঞ্জাব ও খায়বার পাকতানখাওয়া প্রদেশের পরিষদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
হায়দার বলেন, ‘প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেয়া হলে তা পাকিস্তানের জন্য বড় ধরনের সঙ্কটের সৃষ্টি করতে পারে। কারণ তখন আগাম নির্বাচন ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না। আর এপ্রিল অপসারিত হওয়ার পর এই দাবিই করে আসছেন তিনি।’