ক্রিকেট

তাইজুল-মিরাজ ঝলকে আশা দেখছে বাংলাদেশ

ভারতের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় টাইগাররা। তবে বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় সেশনটা রাঙাতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল।

বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৭৮ রান। ২০৩ বলে সর্বোচ্চ ৯০ রান করে দিনের একদম শেষভাগে আউট হয়েছেন পূজারা।

তার উইকেট পাওয়ায় মিলেছে কিছুটা স্বস্তি। তবে আরেক পাশে তিনবার জীবন পেয়ে অস্বস্তির কাটা হয়ে টিকে আছেন ৮২ রান করা শ্রেয়াস।

এদিন ১১২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর চেতেশ্বর পূজারা ও শ্রেয়াস আয়ারের ১৪৯ রানের জুটিতে ভর করে চট্টগ্রাম টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় দল। তবে শেষ বিকেলে ৯০ রানে থাকা পূজারাকে বোল্ড হয়ে ফেরেন তাইজুল ইসলামের বলে। এরপর অবশ্য ইনিংসের শেষ বলে ১৪ রানে তাইজুল ফেরান অক্ষর প্যাটেলকে।

নিজের ২২ রানে থাকা অবস্থায় ফিরতে পারতেন পূজারা। কিন্তু নুরুল হাসান সোহান নিতে পারেন নি তার তুলে দেওয়া ক্যাচ। এরপর সোহান মিস করেছেন আয়ারের ক্যাচও। তখন তার সংগ্রহে ৩০ রান। ক্যাচ মিস করেছেন পেসার এবাদতও, ৬৭ রানে ব্যাট করা অবস্থায় সেই আয়ারের ক্যাচ ফের ছেড়েছেন সিলেটের এই পেসার।

অথচ দিনের প্রথম সেশনটা বাংলাদেশ ভালোই শুরু করেছিল। লোকেশ রাহুল (২২), শুভমান গিল (২০) এবং বিরাট কোহলিকে (১) ফিরিয়ে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন টাইগার বোলাররা। এরপর ৮৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।

দুপুরের খাবার শেষে মাঠে ফিরে অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটার রিশব পান্ত। দুপুরের খাবার শেষে ব্যাট করতে নেমে বাঁহাতি এই ব্যাটার আগের ২৯ রানের সাথে যোগ করেন ১৭ রান। দলীয় ১১২ রানে মেহেদী মিরাজের বলে ব্যক্তিগত ৪৬ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান মারকুটে এই ব্যাটার।

এরপরই জুটি বেধে বাংলাদেশকে হতাশ করতে থাকেন পূজারা-শ্রেয়াস। ক্রিজে এসে চতুর উপস্থিতি দিয়ে থিতু হতে সময় নেননি শ্রেয়াস। থিতু হয়েই অবশ্য বিদায় নিতে পারতেন। ৪৮তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনিও। এবারও কিপার সোহান তা হাতে রাখতে পারেননি। তখন ৩০ রানে ছিলেন শ্রেয়াস।

ফিফটির আগে তিনি আর দেননি কোন সুযোগ। অনায়াসে চালাতে থাকেন ব্যাট। তবে অতি আত্মবিশ্বাসের তোড়ে মিরাজের বলে আরেকবার ক্যাচ দিয়েছিলেন। ৬৭ রানে ওয়াইড লং অন দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন। বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়ানো ইবাদত হোসেন ছেড়ে দেন তার একদম লোপ্পা ক্যাচ।

ইবাদত দিনের শেষভাগে এসে আরেক দফা আক্ষেপে পুড়েন। ৭৭ রানে তার বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নিতে পারতেন শ্রেয়াস। কিন্তু বল শ্রেয়াসকে পরাস্ত করে স্টাম্পে আঘাত হানলেও অবিশ্বাস্যভাবে বেল পড়েনি।

পরের ওভারে তাইজুল দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন সেঞ্চুরির কাছে থাকা পূজারাকে। এতে ভাঙে ৩১৬ বলে ১৪৯ রানের জুটি।

এরপর আরও এক উইকেট নিয়ে দিনটি পুরোপুরি নিজেদের করে নেওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। তাইজুলের বলে অক্ষর প্যাটেলের ব্যাটে লেগে ক্যাচ ধরেন। আবেদন করলেও আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নিলে ফিরতে হতো ভারতীয় ব্যাটারকে। পরে কিছুটা কঠিন ক্যাচ ফেলেন সোহান। সারাদিনে সবমিলিয়ে তিনটি সুযোগ হারিয়েছেন এই উইকেটরক্ষক।

দিন পুরোপুরি বাংলাদেশের করার দায়িত্ব নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই স্পিনার ২৬ বলে ১৩ রান করা অক্ষর প্যাডেলকে এলবিডব্লিউ করেন। ভারতীয় ব্যাটার রিভিউ নিলেও বাঁচতে পারেননি। তার আউটের পরই দিনের খেলার শেষ ঘোষণা করা হয়।