দেশবার্তা

তুমব্রু সীমান্তে শনিবারও গোলাগুলির শব্দ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশ এলাকায় গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে।

আশ্রিত রোহিঙ্গারা খোলা আকাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, বুধ ও বৃহস্পতিবারের গোলাগুলি এবং অগ্নিকাণ্ডের পর কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ভেতরে চলে যায়। অন্যরা তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তার আশপাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তবে কিছু রোহিঙ্গা উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন বলে আশ্রিত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন। তুমব্রু এলাকায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা রশিদ আহমেদ বলেন, তিন দিন ধরে এখানে অবস্থান করছি। অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে হতাহত হয়েছে অনেক। শনিবার সকাল ৮টায়ও থেমে থেমে গুলিবিনিময় হয়েছে।

মোহাম্মদ হাশিমের স্ত্রী জয়নাভ বেগম বলেন, আমার বাড়ির পাশে প্রথম আগুন লাগে। ওই দিন মিয়ানমারের ওপারে আশ্রয় নিয়ে ছিলাম। গত দুদিন হলো এখানে এসেছি। দু’পক্ষের গোলাগুলি চলছে। গত পাঁচ বছর আগে স্বামী ও বাবাকে হারিয়েছি। এখন নিঃস্ব।

আমেনা বেগম বলেন, স্কুলের বারান্দায় আমাদের জীবন।বড় অভাগা।

জানা গেছে, বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনো অচেনা লোকজনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট কমিটির উদ্যোগে প্রতি পরিবার কে দু লিটার পানি, ৫ শ গ্রাম চিনি, শুকনা খাবার, ৪কেজি চিড়া ও ৫ প্যাকেট বিস্কুটসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, তুমব্রু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালি জায়গায় রোহিঙ্গারা অস্থায়ী তাঁবু তৈরিতে ব্যস্ত।

আবদুল করিম নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, এটা আমাদের জীবন। করার কিছু নেই।

এ ব্যাপারে ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত গোলাগুলি বন্ধ ছিল। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার পর ফের গোলাগুলি শুরু হয়। শনিবার সকাল ৮টায়ও গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। গোলাগুলির ঘটনায় সীমান্তবাসীদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

এ পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলোয় দুর্বৃত্তদের আনাগোনা বন্ধে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ (এপিবিএন) সংশ্লিষ্টরা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা জানিয়েছেন, তিনি নতুন করে গোলাগুলির খবর পাননি।

তিনি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। শূন্যরেখায় নতুন করে গোলাগুলির খবর আমার জানা নেই। ঘটনার জেরে পালিয়ে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা এখনো সেখানে অবস্থান করছেন। বিজিবি সংশ্লিষ্ট কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।