পশ্চিমা মিত্রদের কাছে বেশকিছু দিন ধরনা দেওয়ার পর তাদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক ট্যাংক পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে ইউক্রেন। এবার মার্কিন এফ-১৬ ফাইটার জেট পেতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আবদার জানিয়েছে কিয়েভ। বিষয়টি স্বীকার করে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইউক্রেনের অনুরোধের ব্যাপারে তারা অবহিত।
এর আগে অনেক ‘অনুনয়-বিনয়ের’ পর অবশেষে চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনকে ট্যাংক ও অন্যান্য ভারি অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিসহ অন্যান্য দেশ। এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছে রাশিয়া। এমনকি পশ্চিমা মিত্রদের ট্যাংক পাঠানোর আগেই ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে মস্কো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রুশ সেনাদের ব্যাপক হামলার মুখোমুখি হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। রাশিয়াকে ঠেকাতে পশ্চিমা মিত্রদের ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর থেকেই হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন।
কিয়েভ মনে করছে, পশ্চিমা মিত্ররা দেশটিকে ট্যাংক সরবরাহের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিস্তৃত পরিসরে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। এর আগে কয়েক সপ্তাহের দেনদরবারের পর চলতি সপ্তাহে জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে কয়েক ডজন অত্যাধুনিক ট্যাংক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। যাতে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ সেনাদের হটিয়ে দিতে পারে। ওয়াশিংটন ও বার্লিনের ঘোষণা কিয়েভকে সহায়তার ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের বাধাও কেটে যায়।
পোল্যান্ড ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ৬০টি ট্যাংক দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে আলোচিত জার্মানির লেপার্ড ২ ট্যাংক রয়েছে ১৪টি।
ফ্রান্সে থাকা ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভিদিম ওমেলচেঙ্কো শুক্রবার বিএফএম টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশ মিলে ইউক্রেনকে ৩২১টি ট্যাংক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এদিকে, ট্যাংক পাওয়ার প্রতিশ্রুতির পর ইউক্রেন তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এবার মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চেয়ে বসেছে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ইউক্রেনের অনুরোধের ব্যাপারে অবিহত ওয়াশিংটন। তবে অতিরিক্ত কোনো অস্ত্রের ব্যাপারে আজ আমাদের বলার কিছু নেই।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে দেশটির সামরিক বাহিনী। প্রাথমিকভাবে মস্কো আশা করেছিল, এক সপ্তাহ কিংবা সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে মস্কো। কিন্তু দেখতে দেখতে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রায় এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা, এমনকি রাশিয়াও বলছে, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখলে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে।