হত্যাকাণ্ড

সোনারগাঁওয়ে স্ত্রীকে হাতুড়ি পেটা করে হত্যা, স্বামী পলাতক

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে স্ত্রীকে হাত পা বেধে দুই সন্তানের সামনে হাতুড়ি পেটা করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, নিহতের নাম আখিঁ আক্তার। বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সাইদুল ইসলাম তার স্ত্রীকে হাতুড়ি পেটা করে পালিয়ে যান। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইব্রাহিম প্রধানের মেয়ে আখিঁ আক্তারের সাথে চেঙ্গকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলামের ১৫ বছর আগে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল। দাম্পত্য জীবনে তাদের অর্ণব ও সিয়াম নামের দুটি সন্তান রয়েছে। নানা অজুহাতে সাইদুল প্রায়ই আখিঁকে মারধর করতেন। বৃহস্পতিবার রাতেও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আখিঁকে স্বামী সাইদুল হাত পা বেধে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটাতে থাকে। হাতুড়ির আঘাতে আখিঁ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে সন্তানরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত স্বামী পালিয়ে যায়।

গ্রামবাসীরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে সাঈদুল ইসলাম তার দুই ছেলের সামনে তার স্ত্রীকে হাত-পা বেধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। প্রায়ই তিনি স্ত্রীকে মারধর করতেন বলে অভিযোগ করেন তারা। বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ তার ঘর থেকে ছেলেদের চিৎকারের শব্দ শুনে গ্রামবাসীরা গিয়ে দেখে স্ত্রীর হাত-পা বাঁধা। তার মাথায় বিভিন্ন অংশ থেতলানো ছিল। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নিহত আঁখির ছেলে অর্ণব জানান, রাতে বাবা ও মায়ের ঝগড়া হয়। বিভিন্ন সময়ে মা বাবা ঝগড়া করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে একপর্যায়ে মাকে বাবা হাত-পা বেঁধে ঘরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। একপর্যায়ে বাবা পালিয়ে যায়। মাকে হাসপাতালে নিলে মা মারা যায়। অর্ণব মায়ের হত্যার বিচার দাবি করেন।

চেঙ্গাকান্দি গ্রামের আব্দুল আউয়াল জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারে কলহ ছিল। এ কলহ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম জানান, গৃহবধু হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।