কোস্টগার্ডকে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গভীর সমুদ্রে নজরদারি বাড়াতে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রণয়নের পাশাপাশি হোভারক্রাফটের মতো আধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে কোস্টগার্ড সদর দফতরে ‘বাংলাদেশ কোস্টগার্ড’-এর ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, শুধু আওয়ামী লীগের জন্যই সমুদ্রসীমা ও উপকূল রক্ষায় এ বাহিনী প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। সংসদে বিরোধীদলে থাকা অবস্থায় কোস্টগার্ড আইন পাসে উদ্যোগী হয়েছিল আওয়ামী লীগ। কোস্টগার্ডকে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে আরও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশের সুবিশাল সমুদ্র এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি দেশের সুনীল অর্থনীতি কেন্দ্রীক কার্যক্রমের নিরাপত্তা বিধানে কোস্টগার্ড অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ১৯৯৪ সালে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের আনীত বিলের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড একটি বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এরপর ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকার কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন জোনের জন্য ভূমি বরাদ্দ, অবকাঠামো নির্মাণ এবং নতুন নতুন জলযান সংযোজনের মাধ্যমে কোস্টগার্ডের অগ্রযাত্রায় বিশেষ অবদান রাখে।
তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের উপকূলীয় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোস্ট গার্ডের স্টেশন ও আউট পোস্টসমূহে কোস্টাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন আকারের ৭৭টি জলযান নির্মাণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের অর্থনীতি দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল, যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এখন আমাদের নির্মাণ করতে হবে, আমরা এ বিষয়ে কিছুটা মিতব্যয়ী হয়েছি। কারণ করোনা অতিমারি সারা বিশ্বের অর্থনীতিকে স্থবির করে দিয়েছিল, সেখান থেকে কেবল যখন উত্তরণ ঘটছে সেই সময় আসলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার ফলে সারা বিশ্বের মূল্যস্ফীতি, প্রতিটি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, যার ফলে আমাদেরও মিতব্যয়ী হতে হবে। এ বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। সেই সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী যে খাদ্য মন্দা দেখা দিয়েছে তার থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করবার জন্য আমি আহ্বান জানিয়েছি সকলকে।
তিনি বলেন, প্রত্যেকের কর্মস্থল থেকে শুরু করে বাসাবাড়ি যার যেখানে এতটুকু জমি যে যা কিছু পারেন উৎপাদন করবেন। যেন কখনো বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি না হয় এবং বাংলাদেশের মানুষ খাদ্যে কষ্ট না পায় আমরা সেই উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উর্বর মাটি এবং আমাদের মানুষ শক্তিশালী তাদেরকে নিয়েই আমাদের এই অবস্থা মোকাবিলা করবো ইনশাআল্লাহ। কাজেই এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আপনার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছিন, এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার লক্ষ্য ছিল ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালিয়েছি। বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। ভূমিহীন মানুষকে আমরা বিনা পয়সায় দুই কাঠা জমি ও ঘর তৈরি করে জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যাতে করে বাংলাদেশের মানুষ দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত না হয়।