দেশবার্তা

বোয়ালমারীতে গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে কলেজ শিক্ষকসহ ২ জনকে কুপিয়ে জখম

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক কলেজ শিক্ষকসহ দুইজনকে কুপিয়ে-পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। আহতরা হলেন, কলেজ শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম (৫৬) এবং ইব্রাহিম মোল্যা শাওন (৩৫)। আহত দুইজনই উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বেলজানি গ্রামের বাসিন্দা। শাহিনুল ইসলাম পাশের মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার কাজী সালিমুল হক মহিলা কলেজে সহকারী অধ্যাপক ও ইট ব্যবসায়ী ইব্রাহিম মোল্লা শাওন বেলজানি গ্রামের রমজান মোল্লার ছেলে।

জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেলজানি গ্রামের ইউপি সদস্য মো. আলাউদ্দিন ও ব্যবসায়ী হাজী রেজাউল করিম রেজার সাথে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের কলেজ শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম, আবুল কালাম ও ফারুক হোসেনের গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিলো। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়না ইউনিয়নের খরসূতি গ্রামের ঈদগাহ সংলগ্ন একটি সেলুনে আহত শাহিনুল ইসলাম, শাওন ও ফারুক হোসেনসহ কয়েকজন বসে কথা বলছিলেন। এ সময় ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন পক্ষের কয়েকজন সমর্থক পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। সেলুনে বসে আলাউদ্দিন মেম্বারের বিপক্ষে প্রতিপক্ষরা আক্রমণাত্মক মন্তব্য করায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শাহিনুল ইসলামের দুই হাত-পা এবং ইব্রাহিম মোল্যার পা কুপিয়ে-পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যান। স্থানীয়রা আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বর্নিচর বাজারে ওই গ্রামের কয়েকজনের আহতদের একটি মিটিংয়ে বসার কথা ছিলো বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রভাবশালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাসপাতাল চত্বরে জানান। তবে ফারুকুজ্জামানের বড় ভাই ময়না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. খসরুজ্জামান দুলুর মৃত্যুর পর থেকেই বেলজানি গ্রামে দুই গ্রুপই বিভিন্ন সময় খিচুড়ি খেয়ে দল পাকাপাকি করছিলো। খসরুজ্জামান দুলুর মৃত্যুর পূর্বে এলাকা শান্ত ছিলো বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জরুরি বিভাগে কর্মরত সাবরিনা হক রুম্পা বলেন, দুইজনের পায়েই গুরুতর জখম আছে। পায়ে ফ্রাকচার (অস্থিভঙ্গ) আছে কি-না জানা এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, অতর্কিত আক্রমণ করে মুহূর্তের মধ্যে হামলাকারীরা চলে যায় বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সাথে সাথে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীদের আটকে অভিযান চলছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।