আন্তর্জাতিক

যুদ্ধে পুতিন জয়ী হলে বিপদ কোথায়, জানালেন ন্যাটো মহাসচিব

চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সামরিক জোট ন্যাটো। স্বাভাবিক কারণেই এই যুদ্ধে রাশিয়া জয়ী হলে ঝুঁকিতে পড়বে ইউরোপ। এমনকি গোটা বিশ্ব একটি বিপর্যয়ের দিকে যাবে।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। তার মতে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি যুদ্ধে বিজয়ী হন, তাহলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়বে ইউরোপ।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটটির প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, তখন ঝুঁকিমুক্ত বিকল্প কিছু নেই। বরং ঝুঁকি আরও বেশি হবে, যদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধে জয়ী হন।

নিউজউইক জানিয়েছে, শনিবার জার্মানির মিউনিখ সম্মেলনের অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় ন্যাটোপ্রধান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করছেন, ইউক্রেনের প্রতি আমাদের সমর্থন ঝুঁকি তৈরি করছে। তবে আমি পরিষ্কার বলতে চাই, ঝুঁকিমুক্ত কোনো বিকল্প নেই। বরং সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি হবে, যদি পুতিন এই যুদ্ধে বিজয়ী হন।’ জোটের বাইরেও ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বলেন স্টলটেনবার্গ।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ন্যাটোর মহাসচিব বলেন, পুতিন যদি এই যুদ্ধে জয়ী হন, তা হলে অন্য স্বৈরশাসকরা তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য বল প্রয়োগে উৎসাহিত হবে। এর ফলে একদিকে যেমন বিশ্ব বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়বে, তার চেয়েও বেশি ঝুঁকিতে পড়বে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

‘সুতরাং এ মুহূর্তে ইউক্রেনকে শুধু নৈতিকভাবে সমর্থন করাই যথেষ্ট নয়; বরং এটি আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থের বিষয়,’ বলেন স্টলটেনবার্গ।

মিত্রদের প্রতি প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে ন্যাটোপ্রধান বলেন, ‘পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। কারণ রাশিয়া এমন একটি ইউরোপ চায়, যেখানে প্রতিবেশীদের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে।’

এদিকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকের সঙ্গে কথা বলেছেন বোস্টন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইগর লিউকস। পূর্ব ইউরোপের রাজনীতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্প্রসারণ নীতির মধ্যে লুকিয়ে আছে পশ্চিমাদের হুমকি।

প্রফেসর ইগর লিউকস বলছেন, ‘পুতিন ক্রিমিয়া জয় করে যখন দোনবাসে হস্তক্ষেপ শুরু করেছিলেন, তখন পশ্চিমরা এই আশায় কিছুতেই করেনি যে, তিনি (পুতিন) তার সাম্প্রতিক অগ্রযাত্রায় সন্তুষ্ট থাকবেন। অথচ পুতিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, ক্রিমিয়া তার জন্য যথেষ্ট নয়, তাই তিনি বাকি অংশের দখল নিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, এ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া দরকার যে, আগ্রাসনকারী থেকে পিছু হটলে শান্তি নিশ্চিত হয় না। বরং এটি তাকে নিরুৎসাহিত করে এবং তার ঘরোয়া প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে তাকে দুর্বল করে দেয়।