ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ২১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাওয়ার রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি রুটম্যাপ চূড়ান্ত করেছে, যা ২০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাত ৮টা থেকে কার্যকর হবে।
রুটম্যাপ অনুযায়ী, সর্বস্তরের জনসাধারণ পুরনো হাইকোর্টের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল ক্রসিং, বাংলা একাডেমি, টিএসসি মোড়, ভিসি ভবনের পাশ দিয়ে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি মোড়, নিউমার্কেট-ক্রসিং পার হয়ে আজিমপুর কবরস্থানের উত্তর দিকের গেইট দিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ করবেন এবং শহীদদের কবর জিয়ারতের পর আজিমপুর কবরস্থানের মূল গেট (দক্ষিণ দিকের) দিয়ে বের হয়ে আজিমপুর সড়ক হয়ে পলাশী মোড় থেকে সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবেন।
কবরস্থানে না গিয়ে বিকল্প পথে যারা শহীদ মিনারে যেতে চান, তারা ভিসি ভবন পার হয়ে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি মোড় থেকে বাম দিকের রাস্তা দিয়ে (জহুরুল হক হলের পশ্চিমের রাস্তা) সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা হয়ে শহীদ মিনারে যেতে পারবেন।
নিউমার্কেট ক্রসিং থেকে ইডেন কলেজের সামনের রাস্তা দিয়েও আজিমপুর মোড়, পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা ধরে শহীদ মিনারে যাওয়া যাবে।
চাঁনখারপুল এলাকা থেকে বকশি বাজার মোড় হয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের রাস্তা দিয়েও পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা ধরে শহীদ মিনারে যাওয়া যাবে।
টিএসসি মোড় থেকে জগন্নাথ হলের পূর্ব পাশের রাস্তা অর্থাৎ শিব বাড়ির পশ্চিম পাশ দিয়ে শহীদ মিনারে ও মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
ভিসি ভবন গেট থেকে ফুলার রোড হয়ে ফুলার রোড মোড় পর্যন্ত রাস্তা এবং চাঁনখারপুল থেকে কার্জন হল পর্যন্ত রাস্তা জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ও পেছনের রাস্তা দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে শুধু প্রস্থান করা যাবে, শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা থেকে ক্যাম্পাস এলাকার অন্যান্য সড়ক বন্ধ থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
যেখানে তারা ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদ দিবস উপলক্ষে নেয়া রুটম্যাপ ও সার্বিক প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবির ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের জন্য বরাবরের মতো এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি এবং বিভিন্ন উপ-কমিটি নানাবিধ দায়িত্ব পালন পালন করছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার শ্রদ্ধা জানানোর পর অন্য সংগঠনগুলো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। এ বছর ব্যক্তি পর্যায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা যাবে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, বেদির প্রাঙ্গণ ধুয়ে-মুছে রং করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকাটিকে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে এবং চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিক সিসি টিভি ক্যামেরার মাধ্যমে এলাকা পর্যবেক্ষণ করছে।
আইন অনুষদের সামনে পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। যাতে এলাকা মনিটরিং করতে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া যায়।
অন্যদিকে ঢাবির চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শেষ সময়ে তাদের চিত্রকর্মে তুলির সর্বশেষ আঁচড় দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ঢাবির চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম গত দুই দিন ধরে দেয়ালচিত্র করছেন।
তিনি আরো বলেন, প্রস্তুতি প্রায় শেষ। বাকি আছে শুধু কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের গ্রাফিতি। বাকি অংশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে।