জাতীয়

দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধের প্রতিবাদে দিনকাল ইউনিটের বিক্ষোভ সমাবেশ

আইন মেনে সকল কাগজপত্র জমা দেয়ার পরও অন্যায়ভাবে জাতীয় দৈনিক দিনকালের ডিক্লেয়ারেশন বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসাথে যায় না। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণমাধ্যমের ওপর খড়গ নেমে এসেছে। ১৯৭৫ সালে ৪টি পত্রিকা রেখে সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এবারো ক্ষমতায় এসে অসংখ্য পত্রিকা ও টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের সর্বশেষ আক্রান্তের শিকার দৈনিক দিনকাল। অতীতেও গণমাধ্যম বন্ধ করে সরকারের শেষ রক্ষা হয়নি, এবারো দিনকালসহ বিভিন্ন মিডিয়া বন্ধ করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।

বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে দিনকালের প্রকাশনা খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শীর্ষ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের দৈনিক দিনকাল ইউনিটের আয়োজনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড প্রদক্ষিণ করে কদম ফোয়ারা মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।

দিনকালের ইউনিট চীফ আবদুল্লাহ জেয়াতের সভাপতিত্বে এবং দিনকালের বার্তা সম্পাদক ও ডিইউজের সহ সভাপতি রাশেদুল হকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি ও দৈনিক দিনকালের ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউর সভাপতি মোরসালিন নোমানী, ডিইউজের সহ সভাপতি শাহীন হাসনাত, বাছির জামাল, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু, ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ গাযী আনোয়ার, প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, একেএম মহসীন, জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুই প্রমুখ।

রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। এজন্য এই সরকারের পতন আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। অবিলম্বে দিনকাল খুলে না দিলে সারাদেশে সাংবাদিক সমাজ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের কাজই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা। স্বাধীনতার পর তারা ৪টি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। এবারো তারা দিনকালসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা গণমাধ্যমের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র যারা আওয়ামী লীগমনা এবং সরকারের হুকুম পালন করে সেসব গণমাধ্যম চালু আছে। দিনকালই একমাত্র সরকারের সমালোচনা করে সংবাদ প্রকাশ করতো সেজন্য সেটিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি অবিলম্বে দিনকাল খুলে দেয়ার জোর দাবি জানান। তা না হলে অতীতের মতো এবারো তাদের শেষ রক্ষা হবে না।

অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, দিনকাল বন্ধ করে সরকার নিজের পায়ে কুড়াল দিয়েছে। বিশ্বো ৪০টি দেশে দ্যা গার্ডিয়ানসহ নামিদামি গণমাধ্যমে দিনকাল বন্ধের খবর প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল জাতিসঙ্ঘ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তিনি অবিলম্বে দিনকাল খুলে দেয়ার দাবি জানান।

এম এ আজিজ বলেন, দিনকাল পত্রিকা বন্ধ সরকারের সবশেষ আক্রমণ। এর আগেও অসংখ্য পত্রিকা সরকার বন্ধ করেছে। বর্তমানে কেউ বলে না দেশে গণতন্ত্র আছে। এই সরকার কতৃত্ববাদী সরকার। এই সরকারের পতনই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে।

নুরুল আমিন রোকন বলেন, এই সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই মিডিয়া বন্ধ করে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এখনো তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকালসহ সব মিডিয়া খুলে না দিলে সরকারের পরিণাম ভাল হবে না।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ৩৬ বছরের একটি পুরাতন পত্রিকা ফ্যাসিবাদী সরকার বন্ধ করে দিয়ে অসংখ্য সাংবাদিককে বেকার করে দিয়েছে। দিনকালের মতো অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অবিলম্বে দিনকাল পত্রিকা খুলে দিন। তা না হলে সাংবাদিক সমাজ কঠোর জবাব দেবে। সকল বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে, সকল কালাকানুন বাতিল করতে হবে। যারা এসবের সাথে জড়িত তাদের শাস্তি দিতে হবে। জনগণের সাথে মিলিত হয়ে চূড়ান্ত আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদী সরকারকে বিদায় করতে হবে।