রাজনীতি

জিয়া পরিবারকে রাজনীতির বাইরে রাখার হীন চক্রান্ত করছে সরকার : মির্জা ফখরুল

সরকার জিয়া পরিবারের সকল সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রহসনমূলক বিচার ও ফরমায়েসী রায় দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার হীন চক্রান্ত করে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার বিচার কাজ শুরু করার লক্ষ্য হচ্ছে তারেক রহমান ও ডা: জোবাইদা রহমানকে রাজনীতির বাইরে রাখা।

আজ বুধবার গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ১৭ এপ্রিল এ অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্ত সমূহ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান।

সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিম্নে বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় বিগত ১০ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়। মহাসচিব সিদ্ধান্ত সমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা: জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় চার্জ গঠন ও বিচার শুরু করায় আদালতের নির্দেশে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে বিরোধী দলকে নির্মূল করার নীল নকশার অংশ হিসেবে ১/১১ অবৈধ সরকারের সঙ্গে যোগ সাজশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক পরিবার শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান জোবায়দা রহমান এবং এই জিয়া পরিবারের সকল সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রহসনমূলক বিচার ও ফরমায়েসী রায় দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার হীন চক্রান্ত করে আসছে। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার বিচার কাজ শুরু করার লক্ষ্য হচ্ছে তারেক রহমান ও ডা: জোবাইদা রহমানের রাজনীতির বাইরে রাখা। প্রকৃত পক্ষে অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন একটি এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। জিয়া পরিবাররই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের প্রায় ৪০ লক্ষ নেতাকর্মী ও সমর্থনকারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, গ্রেফতার, কারাগারে নির্যাতন, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করছে। লক্ষ্য, দেশে কর্তৃত্ববাদী এক নায়কতান্ত্রীক ফ্যাসীবাদকে চিরস্থায়ী করা।

মহাসচিব বলেন, সভা মনে করে, তারেক রহমান ও ডা: জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত জনগণ গ্রহণ করবে না। জনগণের ঐক্য ও দূর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে বাধ্য করতে হবে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বন্দী সকল নেতাকর্মীর মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও ডা: জোবায়দা রহমানসহ সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলা প্রত্যাহার, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার গঠন করতে এটাই এই সময়ে সারাদেশের জনগণের দাবি।

সভা সকল রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণকে এই লক্ষে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানায়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সভায়, ঢাকা মহানগর, বঙ্গবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে অবৈধ সরকার প্রধান শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রীদের বিএনপিকে দোষারোপ করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভা মনে করে অবাধ, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘটন না করে বিরোধী দলের প্রতি আঙ্গুল তোলা ‘উদোর পিন্ডে বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর কৌশল। অগ্নিকাণ্ডগুলোর প্রতিটাই এই সরকারের ব্যর্থতার কারণে সংঘঠিত হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতর ও সংগঠন গুলোর তদারকির অভাব, সীমাহীন উদাসীনতা এবং দুর্নীতির কারণেই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। অন্যদিকে জনগণকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপকৌশল মাত্র।

তিনি বলেন, সভায় অবিলম্বে দোষারোপ পরিত্যাগ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। সভায় আগামী ১ মে আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস পালনের জন্য শ্রমিক দলকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সাংগঠনিক কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন।