কিশোরগঞ্জ ভৈরবে থানা পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাদ্দাম হোসেন (৩০)কে সাড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার করেছে ভৈরব ডিবি ও থানা পুলিশ। ২ মে মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের জাফরনগর গ্রামের প্রত্যন্ত চর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ ছাড়াও এ ঘটনায় আসামি সাদ্দামের মা নাদিরা বেগম (৫৫), বোন সাহিদা বেগম (৩০), আঁখি বেগম (২৫), ভাই নাজমুল (১৫) ও চাচা আলী হোসেন (৫৫) কে আটক করা হয়েছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নরসিংদী জেলার রায়পুরা এলাকার শামসু মিয়ার মেয়ে ও সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী সোহানা (২৫) এর ২০২০ সালে দায়ের করা একটি নারী নির্যাতন মামলায় সাদ্দাম হোসেনের কিশোরগঞ্জ আদালতে ছয় মাস আগে দেড় বছরের সাজা হয়। এই মামলায় সে পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে।
এ ঘটনায় ১ মে সোমবার রাত ৩টায় মিয়া হোসেসনের ছেলে আসামি সাদ্দাম হোসেনকে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। এ সময় আসামি সাদ্দামের পরিবারের লোকজন ৩ পুলিশ সদস্যের উপর অতর্কিত হামলার চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হামলার শিকার থানা পুলিশের ৩ সদস্য আহত হয়েও আসামি সাদ্দাম হোসেনের মাসহ ২ বোনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে আহত পুলিশ সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
ওইদিনই খবর পেয়ে বিষয়টি দ্রুত প্রতিকারে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাদ্দাম ও ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি ডিবি ও থানা পুলিশের একটি টিম গঠন করে সার্বক্ষণিক যৌথ অভিযান কার্যক্রমের সার্বিক তদারকি করেন। এ ঘটনায় ১ মে ঘটনাস্থল থেকেই আসামির মা ও দুই বোনকে ও ২ মে রাতেই আসামি সাদ্দামসহ তার চাচা ও ভাইকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
থানা পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, ১ মে সোমবার ভৈরব থানার এএসআই নাসির বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করে।
এ বিষয়ে আসামি সাদ্দামের মা নাদিরা বেগম বলেন, আমার ছেলে বিয়ে করার পর আমরা তার স্ত্রীকে বাড়িতে আনতে পারিনি। বিয়ের পরদিন আমার ছেলে জানাই তার স্ত্রীর আগেই বিয়ে হয়েছিল এবং তার সিজারিয়ান অপরেশন হয়েছিল। ঘটনা জানারপর থেকেই আমার ছেলে সংসার করতে চাইনি। পরবর্তিতে ছেলের বউ নরসিংদী থানায় মামলা করে। ওই মামলায় কখন আমার ছেলের সাজা হয়েছে তা আমরা জানিনা। হঠাৎ করে রোববার দিবাগত রাতে ভৈরব থানা পুলিশ আমার ছেলেকে ধরতে গেলে আমরা হতভম্ব হয়ে যায়। তবে পুলিশের বিষয়ে আক্রমণ বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের উপর আক্রমণ করাটি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমাদের পুলিশ সুপার মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনায় জড়িত মূল আসামি সাদ্দামসহ আরো ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা নথিভূক্ত করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।