কলম্বিয়ায় আমাজন জঙ্গলের গভীরে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছিল এক মাসেরও বেশি সময় আগে। এতে নিখোঁজ চার শিশুর সন্ধানে টানা উদ্ধারকাজ চলেছে। অবশেষে ৪০ দিন পর চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ বলছেন অনেকেই। অনেকের মনে প্রশ্ন, এত দিন কীভাবে বেঁচে ছিল চার শিশু?
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টানা ৪০ দিন গভীর জঙ্গলে থাকার পরও এই চার শিশু বেঁচে ছিল ওদের নানির কল্যাণে। এই চার শিশুর সবচেয়ে বড়জনকে ওদের নানি খুব ছোটবেলা থেকে গভীর জঙ্গলে মাছ ধরা ও শিকারের কলাকৌশল শিখিয়েছেন।
এমনকি প্রকৃতি থেকে খাবার সংগ্রহের উপায়ও শেখানো হয়েছিল তাদের। দুর্ঘটনার পর এসব কৌশল চার শিশুকে আমাজনের গভীরে বেঁচে থাকার জন্য খাবার সংগ্রহে সহায়তা করেছে।
গত ১ মে ছোট আকারের একটি উড়োজাহাজ আমাজন জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলটসহ প্রাপ্তবয়স্ক তিন ব্যক্তি নিহত হন। উড়োজাহাজে থাকা চার শিশুর খোঁজ মিলছিল না। নিহতদের মধ্যে ওই চার শিশুর মা রয়েছে। ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরসহ ১৫০ সেনাকে মোতায়েন করা হয়। যোগ দেন নিখোঁজ শিশুদের বাবাসহ স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ।
দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর গত শুক্রবার (৯ জুন) কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো টুইট করে জানান, নিখোঁজ থাকা চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এএফপির খবরে বলা হয়, এ ঘটনাকে ‘পুরো দেশের জন্য আনন্দজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট।
জীবিত উদ্ধার হওয়া চার শিশুর মধ্যে সবচেয়ে বড়জনের বয়স ১৩ বছর। আর ছোটজনের মাত্র ১ বছর। অপর দুই শিশুর বয়স ৪ বছর ও ৯ বছর।
তবে এখনো উদ্ধারকাজ শেষ হয়নি। কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী গতকাল শনিবার (১০ জুন) জানায়, এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা উদ্ধারকাজে দুটি কুকুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। কুকুর দুটির নাম—তেলিয়াস ও উইলসন। এর মধ্যে একটি কুকুরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কুকুরটির সন্ধানে কাজ করবেন উদ্ধারকারীরা।
এদিকে এএফপির আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার (১০ জুন) দিনের শুরুতে উদ্ধার করা চার শিশুকে রাজধানী বোগোতায় আনা হয়েছে। কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীর চিকিৎসা উড়োজাহাজে এই চার শিশুকে বোগোতায় আনা হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুদের নেওয়া হয় হাসপাতালে।