বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়ে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনার দল ওয়াগনার গ্রুপ শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হয়েছে দলটি। একইসঙ্গে মস্কোমুখি যাত্রা বন্ধ করে নিজ ঘাঁটিতে ফিরতে শুরু করেছে ওয়াগনার সেনারা।
রাশিয়ান গণমাধ্যম আরটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এক শর্তে বিদ্রোহ থামাতে রাজি হয়েছে ওয়াগনার ভাড়াটে গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনায় সেই শর্ত জুড়ে দেন তিনি।
শনিবার আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, তিনি রুশ সরকার ও ওয়াগনার গ্রুপের মধ্যে মধ্যস্থতা করে একটি চুক্তির ব্যবস্থা করেছেন। যেখানে প্রিগোজিন বলেছেন, তিনি তার সৈন্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিনিময়ে বিদ্রোহ থেকে সরে আসবেন।
এছাড়া চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রিগোজিনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন লুকাশেঙ্কো। সমঝোতা অনুসারে, ওয়াগনার প্রধানের বিরুদ্ধে সবধরনের ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে জানানো হয়, গৃহযুদ্ধের জেরে কোনও রুশ নাগরিক বা সৈনিকের রক্ত ঝরুক – তা চাননি ওয়াগনার প্রধান।
তবে রুশ প্রশাসনের সঙ্গে কবে বিদ্রোহীদের বৈঠক হবে, তা অবশ্য জানা যায়নি। পাশাপাশি, সেখানে কী কী শর্ত থাকবে, তাও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
বেলারুশ সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, মধ্যস্থতায় পৌঁছাতে পুরো একদিন আলোচনা চালিয়েছেন লুকাশেঙ্কো এবং প্রিগোজিন। রাশিয়ার ভূখণ্ডে সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং রক্তপাত বন্ধে সম্ভাব্য শর্ত এবং করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ভূখণ্ডে রক্তপাত এড়ানোর বিষয়ে একটি চুক্তিতে এসেছেন তারা।
ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন তার টেলিগ্রাম চ্যানেল জানিয়েছেন, মস্কোর দিকে অগ্রসরমাণ দলটি থেমে গেছে। রক্তপাত এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আলোচনায় উপস্থিত না থাকলেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ মধ্যস্থতা করা হয়েছে। রাশিয়া ২৪ জানিয়েছে, লুকাশেঙ্কো ও প্রিগোজিনের আলোচনার সঙ্গে একমত হয়েছেন পুতিন।
রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শনিবার বিদ্রোহীরা প্রায় মস্কোর কাছাকাছি পৌঁছে যায়। রাজধানী থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে ছিলেন তারা। কিন্তু আর না এগিয়ে, দ্রুত তাদের ব্যারাকে ফেরার নির্দেশ দেন প্রিগোজিন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে রুশ বাহিনী। এই অভিযান শুরুর কয়েক মাস পর রুশ বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় রুশভিত্তিক বেসরকারি সামরিক কোম্পানি পিএমসি ওয়াগনার। ইউক্রেন ছাড়াও সিরিয়া, লিবিয়া, মালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থের বিনিময়ে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধ করছেন ওয়াগনারের সেনাসদস্যরা।