রাজনীতি

আ’লীগ শান্তি সমাবেশ আহ্বান করে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে : আ স ম রব

বিরোধীদলের কর্মসূচি দেখে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।

তিনি বলেন, ‘আগামী ২৭ জুলাই বিরোধী দলের সমাবেশের কারণে ইতোমধ্যে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা শান্তি সমাবেশ আহ্বান করে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। সমাবেশে কী হবে সে চিন্তায় তারা গায়েবি মামলা দিতে শুরু করেছে। কাউকে কাউকে মারা যাওয়ার ২০ বছর পরেও মামলার আসামি করা হয়েছে। এই সরকার দেশে এভাবে একটি স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে। তারা বলে জনগণের মালিকানার কথা, কিন্তু দেশের মালিকানা কী সত্যি জনগণের আছে?’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন- সঙ্কট উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা’ শীর্ষক গণতন্ত্র মঞ্চের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এ আন্দোলনে সরকারের পতনের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে। বিজয় সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবেন না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। তারা যে দুঃশাসন চালিয়েছে তার অবসান চায় সাধারণ মানুষ। আজকে ক্ষমতাসীনরা বলছে, শেখ হাসিনার নাকি ৭০ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে। তাহলে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন, কোনো কারচুপি করবেন না, ডাকাতি করবেন না, ৭০ শতাংশ মানুষের ভোটে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসুন। তেমন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করে দেখান।

আগামী ২৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিএনপির কর্মসূচির আগে সরকার ভয় পেয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন মান্না।

তিনি বলেন, ‘তারা বলছেন বৃহস্পতিবার ঢাকা শহর অচল হয়ে যেতে পারে। নিজেরাই সব বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ করে দিতে পারে। তারা বিরোধী দলের আন্দোলনের দিন শান্তি সমাবেশ ডেকেছে। তাদের মনেই তো শান্তি নেই। বিরোধী দলের সমাবেশে যে লোক হয়, তার দশ ভাগের এক ভাগ লোকও তাদের সঙ্গে থাকে না। কারণ তারা জানে, আগামীতে ফলাফল কী হবে।’

সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘একটি বুর্জোয়া, স্বৈরতান্ত্রিক দেশে যে ধরনের নাগরিক অধিকার থাকা দরকার, সরকার সেই ন্যূনতম অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকারের সঙ্গে গণতান্ত্রিক সব অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ বন্ধ করে দিয়ে দেশে একটি ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে সরকার। আমরা তাই এক দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের আয়োজন করব। তবে শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, গোটা শাসন ব্যবস্থার কাঠামো পরিবর্তন তথা সংস্কার আমাদের লক্ষ্য।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে নাকি সংবিধান লঙ্ঘিত হবে। শাসন ক্ষমতায় থাকা একটি দলের সাধারণ সম্পাদক কিভাবে এমন কথা বলেন? তারা কি সংবিধান পড়েননি? এমন বক্তব্যে এটাই প্রমাণ করে যে তারা ভোট কারচুপি করবেন, যখন খুশি যার প্রার্থিতা বাতিল করে দেবেন, প্রয়োজনে মামলা দেবেন, সে নির্বাচন মানতে বাধ্য করবে ডাণ্ডা মেরে, কিংবা সিট ভাগাভাগির সমঝোতা করে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে দেশে এখন একটি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ কারণে বিদেশীরা রাষ্ট্রীয় নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাচ্ছে। অমীমাংসিত রাজনৈতিক অবস্থা দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির দিকে ঠেলে দিয়েছে।’

এসময় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বক্তব্য রাখেন।