জাতীয়

খালেদা জিয়ার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত, ১০০ বছর সাজা হলেও ভয় পাই না

হাইকোর্টের একজন বিচারপতিকে নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে পাচ মাসের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার বিচারপতি আবু তাহের মো: সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো: বশির উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চে হাবিবুর রহমান হাবিবকে গ্রেফতার করে হাজির করা হলে আদালত তার বক্তব্য শুনে এই আদেশ দেন।

আদেশের আগে আদালত বলেন, হাবিবুর রহমান দেশের জনগণের কাছে ভুল মেসেজ দিয়েছে। বিচার বিভাগকে তিনি হেয় করেছেন। এই অবস্থায় আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারেন না। কোর্টকে কবর দেয়া মানে দেশকে কবর দেয়া বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অপর দিকে হাইকোর্টের এজলাস কক্ষে দাঁড়িয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেছেন, আমার মমতাময়ী মা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আমার লিভার, কিডনি, এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। আমার ১০০ বছরের সাজা হলেও আমি ভয় পাই না।

শুনানির শুরুতে ল্যাপটপের মাধ্যমে হাবিবুর রহমান হাবিব টকশো যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা দেখানো হয়। আদালতের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শপথ করে বলছি আমি এই বক্তব্য দিয়েছি। এরপর হাবিবুর রহমান বলেন, আমি কিছু মাননীয় আদালতের কাছে কিছু কথা বলতে চাই। তখন হাইকোর্ট তাকে কথা বলার অনুমতি দেন।

হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, খালেদা জিয়ার জীবন বিপন্ন। আমি তার জন্য আমার লিভার প্রয়োজনে দিয়ে দিব। খালেদা জিয়া এমন এক মহীয়শী নেত্রী। তিনি আমার মা। আমার মাকে যদি কেউ কটু কথা বলে সে মারা গেলেও তো তাকে ছাড়বো না। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ভক্ত। তিনি বাংলাদেশে নারী শিক্ষায় জাগরণ সৃষ্টি করেছেন।

আদালতে হাবিবুর রহমান হাবিবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফজলুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল মো: আক্তারুজ্জামান প্রমুখ।

আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি। আর বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর তৎকালীন বিচারক মো: আখতারুজ্জামান। এরপর ২০১৯ সালে মো: আখতারুজ্জামান হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এই বিচারপতিকে নিয়েই ‘অবমাননাকর বক্তব্যের’ অভিযোগে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রুলসহ স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ দেন। যেখানে হাবিবুর রহমানকে তার বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়। তবে গত ৮ নভেম্বর তিনি হাইকোর্টে হাজির না হওয়ায় হাবিবুর রহমান হাবিবকে অবিলম্বে আদালতে হাজির করতে পুলিশের আইজির প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে বিএনপি নেতা মো: হাবিবুর রহমান হাবিবকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। বুধবার দুপুরে তাকে হাইকোর্টে হাজির করা হয়।