রাজনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিক কারণ দেখছি না : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিক কারণ দেখছি না। যারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে নাশকতা করছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।

শনিবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যতো বাধা আসুক, যতো ষড়যন্ত্রই হোক নির্বাচন সম্পন্ন করার বিষয়ে পাহাড়ের মতো অনড় আওয়ামী লীগ। ভোটের পরেও চাপ আসতে পারে, এসব মোকবিলা করার মনোবল ও রাজনৈতিক শক্তি দলের রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যেহেতু জাতিসংঘ থেকে কিছু কথা বলা হচ্ছে, জাতিসংঘ বিশ্বের সকল দেশের। রাজনৈতিক অভিযোগের বিষয়টা তো জাতিসংঘের কাছেই যায়। কিছু কিছু চাপের ব্যাপার নিশ্চয়ই আছে, তা না হলে এত কিছু হলো কেন। বাংলাদেশে গত কয়েক মাস কত রকমের ঘটনা ঘটেছে। এই নিষেধাজ্ঞা আসলো, সেই নিষেধাজ্ঞা আসলো, এসব তো ছিল। এসব বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘকে জানিয়ে রাখল, আমরা ভালো নির্বাচন করছি, কোনো অসুবিধা নেই, অহেতুক কেউ যেন আমাদেরকে চাপ না দেয়।

কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে মানবাধিকার কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছে। আওয়ামী লীগ মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জন্মালগ্ন থেকেই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা ভাসানী থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই অব্যাহত রেখেছে।

আওয়ামী লীগ জনগণের সকল প্রকার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এবার যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ১৩ দেশের ৩৭ ব্যক্তির উপর বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা ৭৫তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়। যে অপশক্তি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে বা করার অপচেষ্টা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য অনুযায়ী এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে তারা নিষেধাজ্ঞা দেয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন গণতান্ত্রিক শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড় করানো ও এ পথকে মসৃণ করার লক্ষ্যে আমরা বিরামহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আমাদের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। সুতরাং নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিক কোনো কারণ আমরা দেখছি না। বরং নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করবার জন্য সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, জ্বালাও-পোড়াও, গুপ্ত হামলা করছে এদের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।

কাদের বলেন, এদেশে মানবাধিকারের ইতিহাস বড়ই ট্র্যাজিক। শুরু করি যদি ১৫ই আগস্ট এ সপরিবারে অবলা নারী, অবুঝ শিশু ও অন্তঃসত্ত¡া নারী কে বর্বরোরচিত যে হত্যাকাণ্ড, এ ব্যাপারে মানবাধিকার নিয়ে যারা কথা বলে তাদের অনেককেই দেখেছি নিরব। তাদের অনেকেই স্বৈরশাসকদের তাঁবেদারি করেছে। এরা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে!

তিনি বলেন, যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, তারা ১৫ ও ২১ আগস্টের হত্যাকাÐ এবং জোট সরকারের নিপীড়নের কথা বলেন না। বিএনপির নির্বাচনকেন্দ্রিক আন্দোলন ব্যর্থ। এখন তারা আগুন দিচ্ছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন, মেরিনা জাহান কবিতা প্রমুখ।