পল্টন থেকে সমাবেশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘেরাও করার উদ্দেশে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা। এতে তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে। পরে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল বাতিল, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে’ তারা মিছিল নিয়ে ইসি ঘেরাও করতে যাচ্ছিলেন।
রোববার দুপুরে রাজধানীর প্রেস ক্লাবের সামনে কদম ফোয়ারা এলাকায় তারা বাধার সম্মুখীন হয়ে সেখানে (কদম পোয়ারা) অবস্থান নেন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন। তবে পুলিশের সঙ্গে কর্মীদের ধস্তাধস্তিতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম এখান থেকে নির্বাচন কমিশনে যাব এবং আমাদের কথা বলব। যদিও আমরা জানি, এই নির্বাচন কমিশনের অন্য একটি চেহারা অতীতে কোনো দিন কেউ দেখেনি। এ সরকার ভাগ-বাটোয়ারা করে ভোট শেষ করতে চায়। তারা নিজেরাই ঠিকঠাক করে সবকিছু শেষ করতে চায়। এ সরকার তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে আমাদেরকে এখানে আটকে দিয়েছে। এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নাই। এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে গড়ে তোলার সংগ্রাম আমরা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ভয়ের রাজত্ব কায়েম করছে। সরকার এমন কিছু আইন করেছে, এখন কোনো কথা বললে জেলে যেতে হবে, গুম করে দিতে পারে। আগামীকাল (সোমবার) থেকে তারা আরেকটি বেআইনি আইন করেছে, সেটি হলো রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। এইটার মানে কী? বাংলাদেশে কি জরুরি আইন জারি হয়েছে? এই আইন অনৈতিক, অন্যায় এবং অসাংবিধানিক। সরকার আমাদের কণ্ঠ বন্ধ করতে পারবে না।বাংলাদেশে আমরা প্রহসনের নির্বাচন হতে দেব না।’
বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা বলেন, ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চাসহ আজকে নির্বাচন কমিশনের অভিমুখে আমাদের কর্মসূচি ছিল। কিন্তু এই কদম ফোয়ারার সামনে পুলিশ আমাদেরকে বাধা দিয়েছে। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপরে হামলা করেছে। আমাদের ওপর পুলিশ যে হামলা করেছে আমরা সেটির তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।’
কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে রমনা জোনের শাহবাগ থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর সরদার বুলবুল আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, আজকে অফিস ডে, সেজন্য যান চলাচলে যাতে কোনো প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে তাই আমরা ওনাদের বলেছি- আপনাদের যদি কোনো দাবি থাকে তাহলে সেটি লিখিত আকারে আমাদেরকে দেন এবং আমরা সেটি নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছে দেব। তারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেছেন। এ সময় আমাদের কয়েকজন নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কিন্তু আমরা তাদেরকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। পরবর্তীতে তারা এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছেন।’