জাতীয়

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে ‌‘আরব বসন্ত’ প্রসঙ্গ

বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার সেই বিবৃতির পর বিষয়টি উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর, স্থানীয় সময়) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের কাছে এক সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে সমর্থন করি এ ছাড়া আমার আর কোনো মন্তব্য নেই।

একই সময় মিলারের কাছে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ১৯ ডিসেম্বর ঢাকাগামী এক্সপ্রেস ট্রেনের ৩টি বগিতে অগ্নিসংযোগ করলে এক নারী ও তিন বছরের শিশুসহ চারজন নিহত হন। বাইডেন প্রশাসন কী এই ধরনের অগ্নিসংযোগের বিষয়ে উদ্বিগ্ন?

সেই প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, আমি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানি না। এই বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।

উল্লেখ, গত ১৭ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বলেছিলেন, ‘গত ১২-১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সরকারবিরোধীরা রাস্তাঘাট অবরোধ করে, যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আমরা এসব ঘটনার সঙ্গে ঢাকায় পশ্চিমা কূটনৈতিক মিশনগুলোর, বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক লক্ষ করছি।’

মারিয়া জাখারোভা আশঙ্কা করছে, আগামী সপ্তাহগুলোয় ‘পশ্চিমা শক্তিগুলোর পক্ষে অসুবিধাজনক’ বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকমের অবরোধ আরোপ করা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর ওপর আঘাত আসতে পারে; সেই সঙ্গে কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক রায় প্রদানে বাধাদানের তথ্যপ্রমাণহীন অভিযোগ তুলে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।’

মারিয়া জাখারোভা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত হবে, এমন সম্ভাবনা কম। বিবৃতির শেষে তিনি বলেন, ‘তবে আমরা নিশ্চিতভাবে মনে করি, বাইরের শক্তিগুলোর সব ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার বিষয়টির সুরাহা হবে দেশটির বন্ধুপ্রতিম জনগণের দ্বারাই, অন্য কোনো শক্তির দ্বারা নয়।’

এই প্রসঙ্গে ১৭ ডিসেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশে আরব বসন্ত ঘটার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করি। সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়—এই নীতিতে। কে কী বলল, না বলল সেটা তাদের মাথাব্যথা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ৭ জানুয়ারি নির্বাচন করব। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করব। বাংলাদেশ যখন হলো তখন এটা ছিল তলাবিহীন ঝুড়ি। এখন আমরা গতিশীল অর্থনীতি, ল্যান্ড অব অপরচুনিটি।’