গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরাইলি বাহিনী। ফলে এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে তাদের কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। ইসরাইলি বাহিনীই এখানে তাদের কঠিন অবস্থায় পড়ার কথা স্বীকার করছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিনিয়র এক ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, উত্তর গাজায় ইসরাইলি বাহিনী যেভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, সেভাবে খান ইউনিসে করতে কয়েক মাস লেগে যাবে। কারণ এখানে হামাস গেরিলা কৌশল অবলম্বন করেছে এবং ইসরাইলি বাহিনীতে হতাহত সৃষ্টি করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সপ্তাহানে এখানে অন্তত ১৬ ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছে।
গাজায় ভয়াবহ ছত্রাক-সংক্রমণে মারা গেল ইসরাইলি সৈন্য
গাজায় ভয়াবহ ছত্রাক-সংক্রমণে এক ইসরাইলি সৈন্য মারা গেছে। হামাসের সুড়ঙ্গে প্রবেশের সাথে এই সংক্রমণের সম্পর্ক আছে বলেও অনেকে মনে করছে।
কান নিউজে সোমবার রাতে অ্যাশদদের আসুতা মেডিক্যাল সেন্টারে কয়েক দিন ভুগে এক ইসরাইলি সৈন্যের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে। ছত্রাকের সংক্রমণে তার অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে চলে আসার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খবরে বলা হয়, গাজায় হামলা শুরু করার পর থেকে অন্তত ১০ ইসরাইলি সৈন্য নানা ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এ ধরনের সংক্রমণের সাথে আগে পরিচিত ছিল না। হামাসের সুড়ঙ্গের সাথে এই সংক্রমণের সম্পর্ক আছে কিনা বা সেখান থেকেই এর উৎপত্তি কিনা তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
গাজায় হাজারের বেশি ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছে : সিনওয়ার
গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের এক হাজারের বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হামাসের সিনিয়র নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার।
তিনি এক বার্তায় লিখেছেন, আমরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন এক যুদ্ধে জড়িত হয়েছি। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না। এখনো আমরা ইসরাইলকে নিশ্চিহ্ন করতে পারব বলে আশা রাখি। আমরা ইতোমধ্যে তাদের এক হাজারেরও বেশি সৈন্যকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে প্রথম বার্তা দিয়েছে হামাসের সিনিয়র নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার। তিনি বলেছেন, আমরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন এক যুদ্ধে জড়িত হয়েছি। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না। এখনো আমরা ইসরাইলকে নিশ্চিহ্ন করতে পারব বলে আশা রাখি। আমরা ইতোমধ্যে তাদের এক হাজারেরও বেশি সৈন্যকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছি। দখলদারদের শর্তাবলী আমরা মেনে নেব না।
তবে টাইমস অফ ইসরাইল জানিয়েছে, আইডিএফের মতে, গাজায় স্থল অভিযানে ১৫৬ ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছে। এছাড়া ৭ অক্টোবরের হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্য নিহত হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইল সীমান্তে হামাস যোদ্ধাদের হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় চলমান গাজা যুদ্ধ। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষেই ব্যাপক হতাহত ঘটেছে। যুদ্ধের সর্বশেষ হতাহতের পরিসংখ্যান নিয়ে প্রতিবেদনে করেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ২০ হাজার ৪২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরো ৫৪ হাজার ৩৬ জন। এছাড়া পশ্চিমতীরে এ পর্যন্ত ৩০৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো তিন হাজার ৪৫০ জন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী ও ইসরাইলি সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিবেদনের সূত্রে আল জাজিরা আরো জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধে ১৪০০ ইসরাইলি নাগরিক নিহত হয়েছে। এছাড়া আরো ৮ হাজার ৭৩০ জন আহত হয়েছে। আর স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ১৫৭ সেনা নিহত হয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল, জেরুসালেম পোস্ট এবং অন্যান্য