গাজা উপত্যকার একটি বাড়িতে হামাসের হাতে আটক থাকা নিজেদের ১২ নাগরিককে ইসরাইলি সেনাবাহিনী হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন ইসরাইলি লেবার পার্টির সাবেক নেতা শেলি ইয়াচিমোভিচ।
মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে আনাদোলু নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেলি ইয়াচিমোভিচ বলেছেন, ৭ অক্টোবর থেকে গাজ্জায় শুরু হওয়া যুদ্ধে এর আগে ভুলবশত নিজ সেনা ও নাগরিকদের হত্যা করা হলেও সম্প্রতি জেনে-বুঝে ১২ ইসরাইলি বন্দীকে হত্যা করেছে ইসরাইল।
তিনি আরো বলেন, অভিযানটি পরিচালনায় ‘হানিবল প্রটোকলের’ আশ্রয় নেয় এতে অংশগ্রহণকারী ইসরাইলী কমান্ডার ও সেনারা, যা ২০১৬ সালে ইসরাইলী আর্মি চিফ অফ স্টাফ গাদি আইসেনকোট বাতিল করে দিয়েছিলেন।
ইসরাইলি মিডিয়ার মতে, ‘হ্যানিবল প্রটোকল’ হলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দ্বারা প্রয়োগ করা একটি সামরিক নির্দেশ যা নিয়ন্ত্রণ করে যে- ফিল্ড ইউনিটগুলো কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় যখন একজন সৈন্য শত্রু বাহিনীর দ্বারা বন্দী হয়।
এতে বলা হয়েছে যে- প্রোটোকলটি ১৯৮৬ সালে খসড়া করা হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে তৎকালীন ইসরাইলি আর্মি চিফ অফ স্টাফ গাদি আইসেনকোটের সিদ্ধান্তের দ্বারা বাতিল করা হয়েছিল। যিনি বর্তমানে সামরিক মন্ত্রী পরিষদে একজন মন্ত্রী হিসাবে কাজ করছেন।
‘হানিবল প্রটোকল’ মতে শত্রুর হাতে আটক সেনা কিংবা ইসরাইলিদের জীবিত রাখার চেয়ে মেরে ফেলাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়।
যাইহোক, ইয়াচিমোভিচ বিশ্বাস করতেন যে- ১২ বন্দীর হত্যাকাণ্ড ‘হ্যানিবাল প্রোটোকল’ বাস্তবায়নের সাথে সম্পর্কিত।
হামলায় প্রটোকল বাস্তবায়নের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি ইসরাইল।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যোদ্ধাদের ইসরাইলি ভূখণ্ডে নজিরবিহীন হামলায় অনেক ইসরাইলি নাগরিক নিহত হয় এবং তারা নারী, শিশু এবং বৃদ্ধসহ ২ শ’র বেশি ইসরাইলিকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায়। গাজা সীমান্তের কাছে ইসরাইলি কিবুতজ বাসিন্দাদের ওপর তারা এই হামলা চালায়।
হামাস তাদের এমন হামলাকে জেরুসালেমের ওল্ড সিটির টেম্পল মাউন্টে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি আগ্রাসনমূলক পদক্ষেপের জবাব বলে বর্ণনা করে। এর প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল।
ইসরাইলি হামলায় ইতোমধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ গেছে, যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৫৩ হাজার।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর