সিলেটের তারাপুর চা বাগানে দুই সপ্তাহ ধরে বেতন না পাওয়া, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত বকেয়ার তৃতীয় কিস্তি না পাওয়াসহ সাতদফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা। দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি অবস্থান, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারাপুর চা বাগান শ্রমিক ও পঞ্চায়েত কমিটি।
চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে শুকনো মৌসুমের কলম বন্ধ থাকায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঘরে ঘরে অভাব, হাহাকার দেখা দিয়েছে। স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করাতে পারছে না শ্রমিকরা।
তারাপুর চা বাগানের শ্রমিক মমতা রায় বলেন, ‘চা বাগানই আমাদের জীবন। আমরা চা বাগান বন্ধ থাকুক এটা চাই না। দুই সপ্তাহ ধরে কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে আন্দোলন শুরু করেছি।’
অপর শ্রমিক গীতা হালদার বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে কোনো বেতন-ভাতা নেই। সন্তানদের স্কুলে ভর্তি যেমন করাতে পারিনি, তেমনি নতুন ক্লাসের বইও কিনে দিতে পারছি না। আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনাটা চাই।’
পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী জানান, ‘কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বার বার বেতন আটকে যাচ্ছে। এতে শ্রমিক পরিবারে নানান সঙ্কট বাড়ছে। বেতন না পাওয়ার কারণে সংক্রান্তি উৎসব পানসে হয়ে গেছে। আমরা অচলাবস্থার অবসান চাই। বার বার বাগান বন্ধ থাকাটা আমরাও চাই না। বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় আন্দোলন করছি।’
পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী জানান, ‘গত ২ সপ্তাহ ধরে বাগান শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছেন না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বকেয়া বেতনের তৃতীয় কিস্তিও আমরা পাচ্ছি না। অধিকার হারিয়ে, অধিকার পাওয়ার দাবিতে ১৬ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু করবে।’