ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বা ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ নজরদারি রাখা হবে বলে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) পূর্বাচল নতুন শহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৪ উপলক্ষে সার্বিক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেলায় কোনো ভোক্তা বা দর্শনার্থী যেন প্রতারিত না হয় সেজন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশনা দেয়া হবে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মেলায় অভিযোগ বক্স ও হেল্প ডেক্স খোলা রাখা হবে। অভিযোগ পেলেই যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এ বছর মেলা প্রাঙ্গণকে দৃষ্টিনন্দন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে সামনে আনার জন্য মেলার প্রবেশদ্বার কর্ণফুলী ট্যানেলের আদলে করা হয়েছে। এক পাশে রুপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অপর পাশে বিমান বন্দরের থার্ড টার্মিনালের প্রতিচ্ছবি রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য রপ্তানিকে বহুমুখী করার মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ানো। গার্মেন্টস খাতের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা এখন পাট এবং চামড়া শিল্পের উপরে বিশেষ নজর দিচ্ছি। এই দুই খাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে পণ্যকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করুক না কেন, আমরা সারা বছর সেটা নিয়ে কাজ করবো।
তিনি আরো বলেন, গত ১৫ বছরে ৬ গুণ রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। আমরা সেখানে বসে থাকতে চাইনা। পণ্য বহুমুখীকরণ করা গেলে দেশের রপ্তানি আয় একশো বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে হবে। রপ্তানি বাড়াতে না পারলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বাড়ানো সম্ভব হবে না। আমাদের মূল লক্ষ্য হবে লোকাল কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বাড়ানো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার মেলায়, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ ১৬ থেকে ১৮ টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন থাকবে। মেলায় ই-কমার্স সেবাকে আরো বেগবান করা হবে। যাতে সারা দেশের মানুষ এই সুবিধা পেতে পারে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং মেলায় আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র্যাব নিয়োজিত থাকবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মেলা প্রাঙ্গণ ও প্রাঙ্গণের বাইরে নিয়মিত টহল দিবে।
আহসানুল ইসলাম বলেন, মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সংযুক্ত করতে ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে উত্তরা থেকে যারা মেলায় আসবে তারা মেট্রোরেলে করে ফার্মগেট থেকে বাসে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারেন সেই সুবিধা রাখা হয়েছে।
আশেপাশে প্রচুর অপরিকল্পিত দোকান পাট বসে যেখানে মানহীন পণ্য বিক্রয় হয় সেগুলো কিভাবে প্রতিরোধ করবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইপিবি এবং ভোক্তা অধিকারকে কড়া নির্দেশ দেয়া হবে মেলাতে কোনো মানহীন পণ্য বিক্রয় বা প্রদর্শন করা যাবে না। কেউ করলে বিক্রয় বা প্রদর্শন বন্ধের ব্যবস্থা ভোক্তা অধিকার নেবে। ভোক্তাদের প্রতারিত হওয়ার কোনো সুযোগ রাখবো না।
মেলায় বিদেশিদের আনতে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকটা দেশের মিশনে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রয়েছে। তাদেরকে এবার আমরা মেলায় নিয়ে আসবো এবং পণ্যের ব্র্যান্ডিং করা হবে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইসএম আহসান, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম, ইপিবির মহাপরিচালক-১ মাহবুবুর রহমান, মহাপরিচালক-২ বেবি রাণী কর্মকার অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।