জাতীয়

সংসদের প্রথম অধিবেশন কাল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে আগামীকাল। ওইদিন বিকাল ৩টায় অধিবেশন শুরু হবে। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংসদ সচিবালয়। প্রথম অধিবেশনে ভাষণ প্রদান করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসার আসন বিন্যাসের খসড়া স্পিকারের টেবিলে জমা দেওয়া হয়েছে। সোমবারের (আজ) মধ্যে এটি চূড়ান্ত করা হবে।

এদিকে অধিবেশনের প্রথম দিন নতুন সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেবেন সংসদ সদস্যরা।

এ বিষয়ে চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী জানান, ৩০ জানুয়ারি থেকে দ্বাদশ সংসদের মেয়াদ শুরু হচ্ছে। এই সংসদের সরকার ও বিরোধী দলের সব সদস্যকে অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ড. শিরীন শারমিনকে পুনর্র্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রথম দিন ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে।

জানা গেছে, স্পিকারের আসনের ডানদিকে থাকে ট্রেজারি বেঞ্চ। ট্রেজারি বেঞ্চের সামনের সারিতে একাদশ জাতীয় সংসদের মতো সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম সারির প্রথম আসনে বসবেন। পরের আসনে সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। তার পরের আসনটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে। এছাড়া প্রথম সারিতে আসন পেয়েছেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ। সংসদ নেতার পেছনের সারির প্রথম আসনে সরকারি দলের চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী বসবেন।

অন্যদিকে, স্পিকারের বিপরীত দিকে সামনের সারিতে বসবেন বিরোধী দলের নেতা ও উপনেতা। বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বসবেন বিরোধী দলের নেতার আসনের পেছনের আসনে। এটাই হচ্ছে সংসদের আসন বিন্যাসের রেওয়াজ।

বিরোধীদলের নেতার আসনে বসবেন জি এম কাদের। পরের আসনটিতে বিরোধীদলীয় উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। জাপার মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বসবেন বিরোধীদলীয় নেতার আসনের পেছনে।

বিরোধী দলের প্রথম সারিতে বিরোধীদলীয় উপনেতার পাশের আসনটি জাপার রুহুল আমিন হাওলাদার এবং তার পরের তিনটি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে স্বতন্ত্র এমপি আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ও ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননকে।

সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশনের শুরুতেই নতুন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করা হবে। আওয়ামী লীগ গতবারের মতো এবারও স্পিকার হিসেবে শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ডেপুটি স্পিকার পদে শামসুল হক টুকুকে মনোনীত করেছে।

সরকারি দল আওয়ামী লীগ সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এবারও ভোটে তারা বিজয়ী হবে। স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর অধিবেশন কিছু সময় মুলতবি রাখা হবে। ওই সময় রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নতুন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। পরে নবনির্বাচিত স্পিকারের সভাপতিত্বে শুরু হবে সংসদের অধিবেশন বৈঠক। বৈঠক শুরুর পর নতুন স্পিকার সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করার পর মোনাজাত শেষে কিছু সময়ের জন্য অধিবেশন মুলতবি রাখা হবে। আবার সংসদের বৈঠক শুরু হলে স্পিকার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে ভাষণ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশন মুলতবি করা হবে। প্রথম অধিবেশনেই সংসদীয় কমিটিগুলো গঠন করা হবে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সে হিসাবে আজ ২৯ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ।