জাতীয়

তদন্ত কমিটির তিনজনই একই মেডিকেলের যা সন্দেহজনক: হাইকোর্ট

রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি ‘অনুমানের’ ভিত্তিতে রিপোর্ট দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত লিখিত আদেশে বলেছেন, দেশে অনেক দক্ষ চিকিৎসক আছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির ৪ জনের মধ্যে ৩ জন একই মেডিকেল কলেজের (মুগদা মেডিকেল) যা সন্দেহজনক।

শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নতুন কমিটি গঠনের লিখিত আদেশে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেছেন। ৪ পৃষ্ঠার লিখিত আদেশ মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।

লিখিত আদেশে বলা হয়েছে, ‘আমরা সতর্কতার সঙ্গে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক বিবেচনা করেছি এবং রেকর্ডে থাকা তথ্যগুলো পর্যালোচনা করেছি। এতে কোনো বিতর্ক নেই যে, আয়ানকে শুধু খৎনার জন্য অস্ত্রোপচারের উদ্দেশ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়। এটাও বিতর্কিত নয় যে, আয়ানের খৎনা করার আগেই অ্যানেস্থেসিয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করার কারণে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কিন্তু আয়ানের মৃত্যু নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত চার সদস্যের কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেই প্রতিবেদন আয়ানের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক মতামত দেয়নি বরং আয়ান ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন বলে অনুমান করে রিপোর্ট দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তাহলে আয়ানের কীভাবে মৃত্যু হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’

এতে বলা হয়েছে, ‘আদালতের কাছে মনে হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সন্তোষজনক নয়। আমাদের দেশে আরও দক্ষ চিকিৎসক আছে বলে প্রতীয়মান হয়। কিন্তু তদন্ত কমিটির ৪ জনের মধ্যে ৩ জন একই মেডিকেল কলেজের যা সন্দেহজনক। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং উন্নতি নিশ্চিত করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা অপরিহার্য। এ কারণে আমরা নতুন করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। তারা এক মাসের মধ্যে আদালতে নতুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। এছাড়া আয়ানের চিকিৎসায় চিকিৎসকদের অবহেলা ঘটেছে কি না তা খুঁজে বের করবে এবং দায়ীদের চিহ্নিত ও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপের সুপারিশ করবে।’