রাজনীতি

বাস্তবতা বোঝে না বলেই বিএনপি রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রমাণ হয়েছে শেখ হাসিনার হাতেই এদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ। তিনি দেশের বাস্তবতা বোঝেন। আর বিএনপি তা বুঝতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজনীতি থেকে ক্রমে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।’

আজ রবিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে দেশের রাজনৈতিক যে বাস্তবতা, এই বাস্তবতায় বিএনপির মতো একটা দল রিয়ালিটির সঙ্গে এদের কন্টাক্ট ক্রমেই হারিয়ে ফেলছে। প্রমাণ হয়েছে – শেখ হাসিনার হাতেই এদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ। শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। আজকে এটাই বাস্তবতা- তার হাতে যতদিন আছে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’

‘তিনি বাংলাদেশের রিয়ালিটি বোঝেন। মানুষের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে পারেন। যেটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। বোঝে না বলেই তারা রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে’, যোগ করেন সেতুমন্ত্রী।

এ সময় সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বিএনপির সমমনাদের সহিংসতা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সমমনস্করা যদি ষড়যন্ত্র করে, সন্ত্রাস করে, তার মানে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা নেই- এটা মনে করার কারণ নেই। সন্ত্রাস যেখানে আছে, কাজে বিএনপি সেখানে আছে।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক রিপোর্ট নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের নিজস্ব একটা হিসাব নিকাশ আছে এবং পশ্চিমী বিশ্বের এলায়েন্স, সে অ্যালায়েন্স রক্ষা করার বিষয়টি আছে, তারা কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছে, এখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তারা তাদের সুরেই কিছুটা সুর মিলিয়েছেন। তবে আমরা গুরুত্ব দেব মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে কী বলেছেন। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে আগ্রহী।’

‘তা ছাড়া মানদণ্ডের বিষয়টি একেক জনের কাছে একেক রকম। বাংলাদেশে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এই নির্বাচনের মানদণ্ড যদি খুবই তলানিতে গিয়ে পৌঁছতো তাহলে আজকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওয়াশিংটন হাউসের প্রশংসাসূচক মন্তব্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতাম। আমাদের মানদণ্ড ঠিক আছে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় নির্বাচনের মানদণ্ড ঠিক আছে। রিয়ালিটর সঙ্গে আমাদের কন্টাক্ট আছে’, যোগ করেন মন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন সেতুমন্ত্রী। তিনি জানান, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ ২৩১টি স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে ভোট পড়েছে গড়ে ৬০ শতাংশ। নির্বাচন মোটামুটি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি।ভোট শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু হওয়ায় তিনি নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ এবং বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানান।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই নির্বাচনে অনেক জায়গায় বিএনপি নেতারা অংশ নিয়েছেন। কিছু নেতা জয় লাভও করেছেন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ছিল না। এই নির্বাচনের পরও বিএনপির মুখে নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আর কোনো কথা বলার যৌক্তিকতা থাকে না। তারা যত দোষ নন্দ ঘোষ -এ ধরনের একটা আচ্ছন্ন মানসিকতায় ভুগছে এবং সেটাই তারা করে যাচ্ছে।’

এ সময় সিঙ্গাপুর চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সেখানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও মার্কিন রাষ্ট্র দূত পিটার হাসের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের কোন বৈঠক হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘শুনেছি তারা সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু কারও সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি। ’

এ সময় মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবি উড়িয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, মধ্যবর্তী নির্বাচন কোন দুঃখে? মামা বাড়ির আবদার!

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।