মেধাবী সন্তানদের লেখাপড়ার স্বার্থে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখবে কি না, এ সিদ্ধান্ত বুয়েট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সম্প্রতি নাটোরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান শাহীনের চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি চাই তো, আমরাও ছাত্ররাজনীতি করে এই পর্যন্ত এসেছি। ছাত্ররাজনীতি তো বাধা না। একটি শিক্ষাঙ্গনে একদলীয় ছাত্রসংগঠন, তাদের নানা ধরনের নারী ধর্ষণ-নির্যাতন-অত্যাচার, ভিন্নমতের ছাত্রসংগঠনকে থাকতে না দেওয়া এবং নৃশংসভাবে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারকে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে শুধুমাত্র ছাত্ররা না, দেশের সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল ফুঁসে উঠে। তখন বুয়েট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বুয়েটে কোনো রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন থাকবে না। যার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা এখনো বলবৎ আছে কি না, সেই আশঙ্কা আছে কি না- সার্বিক দিক বিবেচনা করে বুয়েটকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি না।’
তিনি বলেন, ‘বুয়েট কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রাখা এবং মা-বাবার মেধাবী সন্তানরা যারা এখানে লেখাপড়া করে তাদের লেখাপড়ার স্বার্থে বুয়েট কর্তৃপক্ষ সেখানে রাজনীতি বিরত রাখবে-এটা তাদের সিদ্ধান্ত। ’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমি মনে করি, বুয়েটের অবস্থার চেয়েও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিবিদ্যালয়ের অবস্থা আরও শোচনীয়। সেখানে ধষর্ণের সেঞ্চুরি পার করেছিল ছাত্রলীগ নেতা মানিক। এর চেয়ে ঘৃণিত আর কী হতে পারে? আসলে তারা কোনো কলঙ্কে কলঙ্কিত না। আমরা যতই তাদের কলঙ্কিত মনে করি, তারা তত অলংকৃত হয়। এর একটি কারণ পেশীশক্তির ব্যবহার এবং প্রশাসনের দলীয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি ধ্বংস করা। ’
‘এখন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আছে কি না সন্দেহ আছে। কিছুদিন পরে বোঝা যাবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আদৌ আছে কি না’-এমন শঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।
নাটের জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক দেওয়ান শাহীনের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে উপস্থিত সাংবাদিকদের গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা প্রায়ই আমাদের নেতাকর্মীরা আক্রান্ত হয়। সারাদেশে ক্ষমতাসীনদের এ নৃশংসতা চলছে। তারপরও বিএনপি নেতাকর্মীরা মাঠ ছেড়ে যায় না।’
তবে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও পেশাশক্তি ছাড়া জনবিচ্ছিন্ন সরকারের পক্ষে রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা।
রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে সিসিইউ’তে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে। তার মৃত্যু সংবাদে সারাদেশে কান্নার রোল পড়লেও ক্ষমতাসীনরা খুশি হবে বলে মনে করেন তিনি।