বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ৭৫ -এ আওয়ামী সরকার বাকশাল কায়েম করেছিল, তার পুনরাবৃত্তি করে আজ আবারো তারা দেশে বাকশাল কায়েম করছে। দেশে আজ কোনো স্বাধীনতা নেই। দেশের মানুষ আজ দেশের ভেতরেই পরাধীনভাবে জীবন যাপন করছে। বিরোধী দল করলেই বা বিরোধী মতের হলেই আজ দেশের সাধারণ মানুষকেও এ দেউলিয়া সরকার আসামি বানিয়ে দেয়। এ সরকার সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার সব অধিকার হরণ করেছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানা বিএনপির আয়োাজনে রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে রুহিয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তৈমুর রহমানের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল সরকারের দেউলিয়া হওয়া নিয়ে বলেন, এ সরকার আজ দেউলিয়া হয়ে গেছে। যার প্রমাণ মেলে তাদের রাষ্ট্র পরিচালনা দেখে। তারা রাষ্ট্র যন্ত্র ছাড়া কোনো কাজই করতে পারে না। তারা এমন দেউলিয়া হয়ে গেছে যে- আজ পুলিশ দিয়ে দেশ পরিচালনা করতে হচ্ছে তাদের। তাদের দেউলিয়াত্ব এতটাই বেড়েছে যে- তা ঢাকতে তারা এমন তামাশার নির্বাচন করেছে। ২০১৪ সালে সাধারণ মানুষ নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও তারা জয়ী হয়, আবার ২০১৮ এর নির্বাচন তারা আগের রাতেই করে ফেলে। আর এবার ডামি প্রার্থী দিয়ে ডামি নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ নেই তারা আজ পুরো দেউলিয়া হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, আমার নামে ১১১টি মামলা রয়েছে আর আমাকে জেলে যেতে হয়েছে প্রায় ১১ বার। এ বৃদ্ধ বয়সেও আমাকে এমন হাস্যকর মামলাগুলো দিয়ে হেনস্থা করছে তারা। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতিগুলোর বিষয়ে আমরা কথা বলি তাই এমন হাস্যকর মামলা খেতে হচ্ছে আমাদের। দেশের ব্যাংকগুলোকে এ সরকার শেষ করে দিয়েছে। নানা সরকারি বেসরকারি নিয়োগের টাকা খেয়ে আর ব্যাংক -এর টাকা চুরি করেই এ সরকার আর সরকারের লোকেরা টিকে থাকছে। আমরা এমন দেশ চাইনি। এমন দেশ গড়ার জন্যও আমরা যুদ্ধ করিনি।
বেগম জিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিষণ অসুস্থ্য। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা খুব জরুরি। না হলে তাকে আর বাঁচানো যাবে না। অথচ তার চিকিৎসা নিয়েও সরকার নানা টালবাহানা করছে।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তৈমুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমরা প্রায় ৩২ বছর এক সাথে পথ চলেছি। আমি রাজনীতি করতে গিয়ে দূরে চলে গেলাম আর ঠাকুরগাঁওকে রেখে গেলাম তৈমুর সাহেবের কাছে। তিনি বেঁচে থাকতে বলতেন, ‘এমন দেশ আমরা চাইনি আর এমন দেশ গড়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। আমরা তাজা রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করেছি দেশ আর দেশের মানুষকে স্বাধীন দেখতে। তা আর দেখতে পারছি না।’
রুহিয়া থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিমসহ দলটির অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।