আন্তর্জাতিক

মার্কিন রণতরীতে হাউছিদের হামলা

ইয়েমেনভিত্তিক হাউছি যোদ্ধারা দুটি মার্কিন ডেস্ট্রোয়ার এবং দুটি জাহাজের ওপর হামলা চালানোর দাবি করেছে। সোমবার লোহিত সাগর এবং ভারত মহাসাগরে এসব হামলা চালানো হয় বলে গ্রুপটির মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া জানান।

ইয়াহিয়া জানান, তারা যে দুটি জাহাজে হামলা করেছেন, সেগুলো হলো সাইক্ল্যাডেস এবং এমএসসি ওরিয়ন।

ভারত মহাসাগরে এমএসসি ওরিয়ন কন্টেইনারটির ওপর ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়। পর্তুগালের পতাকাবাহী এই জাহাজটি পুর্তগাল ও ওমানের মধ্যে চলাচল করছিল। এর মালিক জোডিয়াক ম্যারিটাইম। এর আংশিক অংশীদার ইসরাইলি ব্যবসায়ী ফায়াল ওফার। এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি কোম্পানিটি।

ব্রিটিশ ম্যারিটাইম সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান আমব্রে সোমবার জানায়, মাল্টার পতাকাধারী কন্টেইনার সাইক্ল্যাডেস-এর ওপর হামলা চালানোর কারণ হলো ইসরাইলের সাথে এর বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা। এটি জিবুতি থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা যাচ্ছিল।

ইয়েমেনের জনবহুল এলাকার বেশিভাগ নিয়ন্ত্রণকারী হাউছিরা নভেম্বর থেকে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বাব আল মানদেব, লোহিত সাগর এবং ইডেন উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে মার্কিন ডেস্ট্রোয়ারে হামলার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

তারা জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা থামবে না।

প্রাণঘাতী হামলার পর ইরাকের গ্যাস কমপ্লেক্সে কাজ স্থগিত আমিরাতের কোম্পানির
ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলে এক ড্রোন হামলায় চারজন নিহত হওয়ার পর আমিরাতের মালিকানাধীন ডানা গ্যাস কোম্পানি ইরাকের গ্যাস কমপ্লেক্সেটিতে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। সোমবার কোম্পানিটি এ কথা জানায়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানির মালিকানাধীন খোর মোর কমপ্লেক্সটি সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকবার হামলার শিকার হয়েছে, তবে শুক্রবারের হামলাটি ছিল প্রথম প্রাণঘাতি ঘটনা।

ডানা গ্যাসের উদ্ধৃতি দিয়ে আবুধাবি সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ড্রোনটি একটি কনডেনসেট স্টোরেজ ট্যাঙ্কে আঘাত করলে, এতে চার শ্রমিক নিহত ও অপর আটজন আহত হয়। বিবৃতিটিতে বলা হয়, যদিও স্থাপনাগুলির খুব সামান্য ক্ষতি হয়েছে, তবে তাদের সমস্ত কর্মীর নিরাপত্তার স্বার্থে সাময়িকভাবে উৎ্পাদন স্থগিত এবং নির্দিষ্ট পদ্ধতিগত কিছু পরিবর্তন চালু করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই কাতিউশা রকেট হামলাগুলির দায় স্বীকার না করলেও, তারা বেশ কয়েকবার কমপ্লেক্সটিকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তবে এসব হামলায় উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষতি হয়নি। কুর্দি কর্মকর্তারা এর আগে হামলার জন্য ইরানপন্থী গ্রুপগুলোকে দায়ী করেছে।

বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবারের হামলার কারণে ২ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ক্ষতি হওয়ায় অঞ্চলটির বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। হানাদারদের শাস্তি দেয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে। ডানা গ্যাস বলেছে, খোর মোর গ্যাস স্থাপনায় উৎপাদন পুনরায় শুরু করার অনুমতি দেওয়ার জন্য তারা নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করছে। খোর মোর গ্যাস ক্ষেত্রটি কিরকুক ও সুলাইমানিয়াহ নগরীর কুর্দি শাসিত মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত।

কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের মুখপাত্র পেশাওয়া হাওরামানি জানিয়েছেন, শুক্রবারের হামলায় নিহত চারজনই ইয়েমেনের নাগরিক। গত জানুয়ারিতে, গ্যাসক্ষেত্রটিকে লক্ষ্যবস্তু করে দু’টি কাতিউশা রকেট হামলা চালালে সেখানে আগুন লেগে যায়, তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। সে সময় ইরানপন্থী ইরাকি গোষ্ঠীগুলো ইরাক ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় মার্কিন সেনা আমন্ত্রণকারি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছিল।

সূত্র : আল জাজিরা, আল আরাবিয়া, এএফপি এবং অন্যান্য