বাংলাদেশ যেন কারবালার প্রান্তর- এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, আজকে আবারো ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলা, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ফরমায়েশী রায়ে সাজা ও গ্রেফতারের বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। বাংলাদেশ যেন এখন কারবালার প্রান্তর। ছাত্রলীগ এখন মূর্তিমান আতঙ্ক। নারী ও শিশু নির্যাতন থেকে শুরু করে সকল অপকর্মের সাথে এখন জড়িত তারা। রাস্তাঘাট, বাড়িসহ এদের হাতে মানুষের জীবন অনিরাপদ।
তিনি বলেন, দেশে চলছে এক অর্থনৈতিক নৈরাজ্য, ব্যাংকগুলো টাকার জন্য হাহাকার করছে, ব্যাংক ঋণ বিতরণ করছে আমানতকারীদের অর্থ থেকে, আবার ওই ঋণের অর্থ ক্ষমতাঘনিষ্ঠ লুটেরারা ফেরত দিচ্ছে না। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, আবার চরম ডলার সঙ্কটে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছে না। অন্যদিকে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য ২৬১টি ষ্পোর্টস ইউটিলিটি ভেইকেল অর্থাৎ এক ধরণের স্টেশান ওয়াগন ক্রয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী মত দিয়েছেন। যার প্রতিটির মূল্য এক কোটি ৪৬ লাখ টাকা। গত ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের আগেই কেনার কথা ছিল, যা উৎকোচ হিসেবেই মানুষ বিবেচনা করেছে। যাই হোক, সেই সময় এই ক্রয়ের বিষয়টি স্থগিত রেখে ডামি নির্বাচনে কর্মকর্তাদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতাস্বরুপ এখন তাদের তা দেয়া হচ্ছে। সরকারের এই নীতি কতৃর্ত্ববাদী শাসনের এক চরম দৃষ্টান্ত।
রিজভী বলেন, ‘প্রাইম মিনিষ্টার ম্যান’ খ্যাত বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্টের পররাষ্ট্র দফতরের দেয়া স্যাংশনে সরকারের লোকেরা বিমূঢ় ও স্তম্ভিত হয়ে গেছে। যে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণরত নেতাকর্মীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, ‘বিজিবির সবই লিথ্যাল (প্রাণঘাতি) অস্ত্র। কেউ আক্রমণ করলে জীবন বাঁচাতে গুলি করতে পারে।’ পক্ষান্তরে তিনি আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের ওপর গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন। পৃথিবীর সকল সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে কোনো আধা সামরিক সংগঠনের প্রধান এ ধরণের বক্তব্য রেখেছেন তা আমাদের জানা নেই। যেকোনো দাবির প্রশ্নে জনগণের উত্তাল আন্দোলনে অংশগ্রহণরত শ্রেণী-পেশার মানুষরা সবসময় ‘ইমিউনিটি অব নন-কমব্যাটেন্ট’। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ধৈর্যের সাথে সেটি মোকাবেলা করেন, কারণ আন্দোলনকারীরা সবাই নিরস্ত্র। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ছাত্র আন্দোলন তার একটি উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। সেখানে অনেককে গ্রেফতার করা হলেও কাউকে গুলি করা হয়নি।