দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ‘রিমেমবারিং দ্য হিরোস’ কর্মসূচি পালন করবে তারা। বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কর্মসূচির কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক রিফাত রশিদ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ কর্মসূচিতে নির্যাতনের ভয়ংকর দিন-রাতগুলোর স্মৃতিচারণা; শহীদ ও আহতদের নিয়ে পরিবার এবং সহপাঠীদের স্মৃতিচারণা; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হওয়া নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে চিত্রাংকন/গ্রাফিতি, দেওয়াল লিখন, ফেস্টুন তৈরি ও ডিজিটাল পোট্রের্ট তৈরি করা; এবং ক্যাম্পাস ও এলাকা ভিত্তিক শিক্ষক-ছাত্র-জনতা জমায়েত হয়ে গণহত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ জানানো এবং সাংস্কৃতিক আয়োজন (মৌন মিছিল/ মশাল মিছিল /পথনাটক/মঞ্চনাটক/প্রতিবাদী গানের আসর/মাইম) ইত্যাদি কর্মসূচি আয়োজন করা।
এতে আরো বলা হয়, শহীদদের স্মরণে উপরের যেকোনো কন্টেন্ট/লেখা লিখে নিম্নোক্ত হ্যাশট্যাগ (#JulyMassacre #RememberingOurHeroes) ব্যবহার করে অনলাইনে ও অফলাইনে প্রচার করা। ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি পালনে সর্বাত্মক অংশ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।
এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, ‘আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ আজ সন্ত্রাসের কালো ছায়ায় আচ্ছন্ন।
শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার এই দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বর্বর গণহত্যা চালিয়েছে। আমাদের ঝলমলে দিনগুলো আজ আঁধারে ছেয়ে গেছে। রাতগুলো হয়ে গেছে গণগ্রেপ্তারের আতঙ্কে আরো অন্ধকার।’
‘সরকার ও তার মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও যৌথ বাহিনীর মধ্যযুগীয় বর্বরতায় শাহাদাত বরণ করেছে শিশুসহ শত শত সাধারণ নাগরিক।
চলছে রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণগ্রেপ্তার। সেই সঙ্গে চলছে গ্রেপ্তার বাণিজ্য। সাধারণ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের রাস্তায় ধরে মোবাইল চেক, হয়রানি ও নির্বিচার গ্রেপ্তারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র।’
‘এ ছাড়া আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর ওপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশ। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছেন পুলিশের কিছু কর্মকর্তা।
আমরা এসব ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি স্বাধীন দেশে এমন নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
তিনি আরো বলেন, ‘এমন ভয়ানক পরিস্থিতিতে সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে, জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্রসমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘রিমেমবারিং আওয়ার হিরোস’ কর্মসূচি ঘোষণা করছে।’