বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, যতক্ষণ দেশে নির্বাচিত সরকার না আসবে ততক্ষণ বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবে বিএনপি।
আজ রবিবার বিকেলে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ফুটবল মাঠে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় জামিন পাওয়া সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জন নেতাকর্মীর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা নস্যাৎ করতে এখনো সক্রিয় দেশি-বিদেশি চক্র ও কিছু রাজনৈতিক দল। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত নেতাকর্মীকে মাঠে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি উন্নয়নের রাজনীতি, উৎপাদনের রাজনীতি। আর এই রাজনীতির জন্য দরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার। তাই বিএনপি সব সময় জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার ও রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে উন্নয়নের নতুন ধারা শুরু হবে। আবার খাল খনন করা হবে। সুন্দরবনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তার সুফল ঘরে তুলতে হবে। আম সংরক্ষণাগার, চিংড়ি শিল্পের উন্নয়ন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া কলারোয়ার মাটির টালি বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে উল্লেখ করে বলেন, স্থানীয় উন্নয়ন সম্ভবনা খাতগুলোকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
২২ মিনিটের বক্তব্যে তারেক রহমান বিএনপির বিগত সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, বিনা মূল্যে নারী শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আর শেখ হাসিনা বিগত ১৫ বছরে লাখ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীদের খুন-গুম করেছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে তাদের বিচার জনগণ করবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
সমাবেশে হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে মানুষ ঘরে থাকতে পারেনি। অসংখ্য আলেম ওলামাকে হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটানো হয়েছে। স্বৈরাচারী হাসিনা ১৫ বছর দেশের জনগণকে একদিনের জন্য শান্তিতে থাকতে দেয়নি।
তিনি বলেন, আমাকে ৭০ বছরের সাজা দেয়া হয়েছিল। আমার আমেরিকা ও কানাডার ভিসা ছিল। অনেকেই আমাকে বিদেশে যেতে বলেছিলেন কিন্তু আমি যাইনি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ হাসিনা আজ দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশ এখন হাসিনামুক্ত।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগার বেছে নিয়েছেন তবুও মাফিয়া সরকারের কাছে নতি স্বীকার করেননি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ১২৭ জন বিএনপির নেতাকর্মীসহ হাজারো মানুষ খুন হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার বিচার হতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম ও সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দীন, হাবিবুল ইসলাম হাবিবের স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. শাহানারা পারভীন বকুল, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল হাসান প্রমুখ।