দেশবার্তা

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বড় ভাই কতৃক ছোট ভাইয়ের জমি দখলের প্রতিবাদে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

বাগেরহাট থেকে রুহুল আমিন বাবুঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ছোট ভাইয়ের জমি দখল করে নিয়েছে বড় ভাই বলে এরকম অভিযোগ এনে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী আলাউদ্দিন তালুকদার।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মোরেলগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তাব্যে পূর্বসরালিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন তালুকদার অভিযোগ করে বলেন তার পিতা মৃত মমিনউদ্দিন তালুকদার ও চাচা মৃত মো. হামেজউদ্দিন তালুকদারের ১৯৯০ সালের হেবা দলিল সূত্রে ৭৩ শতক জমির মালিক হয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। নব্বইরশী বাসষ্ট্রান্ড বালুর মাঠ সংলগ্ন সেখানে পাকা ইমারত তিন তলা ভবন ও দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে আসছেন।
সম্প্রতি তারই আপন বড় ভাই আমির আলী তালুকদার ও তার লোকজন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গত ৫ আগষ্টের পর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে তার দলিলকৃত জমির ওপরে লোভবসত হইয়া জোরপূর্বক একটি অংশ দখল করে নেয় এবং বাকি জমি ও দখলে নেওয়ার জন্য পায়তারা করে আসছে। এমনি কি তার পরিবারকে এলাকা ছাড়া করার জন্য ভয়ভীতি হুমকি দিয়ে আসছেন।

তার ভয়ে গোটা পরিবার এখন আতঙ্কে রয়েছেন। অভিযোগে তিনি আরও বলেন আমির আলী তালুকদার এলাকার একজন প্রভাবশালী তার বংশের একাধিক লোকজনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে হয়রানি করছে। তারই আপন ছোট ভাই হয়েও তিনি নিজেও তার মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা থেকে রেহাই পাননি। সংবাদ সম্মেলন থেকে ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন তালুকদার তার বড় ভাইয়ের দখলদারিত্ব ও অত্যাচারের হাত রক্ষা পেতে উর্দ্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে মোঃ আলাউদ্দিন তালুকদার আর বলেন ১১৫ নং মোড়েলগঞ্জ সরালিয়া মৌজার এস.এ. ৬২৯ নং খতিয়ান দাগ-৬৬৯ জমির পরিমান-১.১১ একর সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক আমার পিতা মৃত মোমিনউদ্দিন তালুকদার ও আমার চাচা মৃত মহাম্মদ হামেজদ্দিন তালুকদার। আমার পিতার সম্মুখ অংশ ৫৫.৫ শতক সম্পত্তি ২৬/০২/১৯৯০ ইং সালে আমাকে হেবা দলিল করে দেন। উক্ত স্থানে আমি ০৩তলা ভবনসহ আধাপাকা দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে আসিতেছি। সেখানে আমার ভ্রাতা আমির আলী তালুকদার তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে নিয়ে রাতের আধারে জমি ও দোকানঘর দখল করে অবৈধভাবে অন্যের কাছে ভাড়া প্রদান করে। উল্লেখিত বিষয় এই যে, ৬৬৯ দাগের মধ্য হইতে এল.জি.ই.ডির রাস্তা যাওয়ায় মমিনউদ্দিন ও হামেজদ্দিনের সম্পত্তি ০২ ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এস.এ. ৬২৯ নং খতিয়ানে ৬৬৯ নং দাগে হামেজদ্দিন এর অংশ ০৩/০৯/১৯৬৯ ইং সালে ৯৭০৪ নং কবলা জাল ও তঞ্চকী দলিল সৃষ্টি করে আমির আলী তালুকদার রেকর্ড করে নেয়। পরবর্তীতে হামেজদ্দিন গং জানতে পেরে ১৫০ ধারায় মামলা করে রেকর্ড সংশোধন করে নেন। আমির আলী তালুকদারের প্রতারণা এখানেই শেষ নয়।
আমার পিতার দানকৃত সম্পত্তি আমার অন্য আর এক ভাই নওশের আলী তালুকদারে সাথে দেওয়ানী ১৭৪/৮ নং মোকদ্দমা বানোয়াট কল্পকাহিনীর মাধ্যমে ডিক্রীর কাগজ তৈরী করে। যেখানে সত্য গোপন করে আদালতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাদের অন্য ভাইদের কোথাও বিবাদীভূক্ত করে নাই। সে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ডিক্রীর কাগজ তৈরী করে ছলেনামার কাগজ থেকে আমার পিতার দানকৃত সম্পত্তি হতে ৩৮.৭৫ শতক সম্পত্তি কর্তন পূর্বক রেকর্ড সংশোধন করে। চাচার সম্পত্তি ২০০৬ সালে আমির আলী তালুকদার জাল ও তঞ্চকী দলিল সৃষ্টি করে যাহা আদালত কর্তৃক ভূয়া প্রমাণিত হয়। বর্তমানে আমির আলী তালুকদার পুনরায় আমার পিতার নামে রেকর্ডীয় সম্পত্তি আতœসাৎ এর জন্য মিথ্যা মামলা সৃষ্ট করে রেকর্ড করে। যাহা আতœপ্রকাশ পায় ০৫/০৮/২০২৪ ইং তারিখে। আমার সম্পত্তিতে দোকানঘর অবৈধভাবে নির্মাণের বিষয়ে তার সাথে কথা বলতে গেলে সে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি সহ জীবননাশের হুমকি প্রদান করে।
আমার একমাত্র পুত্র রাজু তালুকদারকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা বিভিন্ন সময় হুমকি সহ অপমান অপদস্ত করে আসছে। আমার পরিবারের সদস্যরা তার এহেন কর্মকান্ডে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে অপরিসীম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন করার জন্য তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা আমার ভবনের পাশে থাকা খাস জমি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। আমার ৬৬৯, ৬৭০ দাগের হস্তান্তরকৃত আংশিক জমি নিয়ে দলের প্রভাব খাটানোর সার্বক্ষনিক চেষ্টা করছে। গত ২৫/১০/২০২৪ ইং তারিখ আমির আলী তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে মৃত শাহাবুদ্দিন তালুকদারকে ও আমার ছোট ভাই জালাল তালুকদারকে জড়িয়ে যে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছে, আমি তার প্রতিবাদ জানাই। সে যে সকল তথ্য উপাথ্য উপস্থাপন করে বিবৃতি দিয়েছে তার কোন সত্যতা নাই। এই ৬২৯ খতিয়ানে আমির আলী তালুকদারের কোন সম্পিত্তি নাই। যাহা জোর জবরানে দখল করে এলাকার ক্ষমতাসীন ব্যক্তি হওয়ায়। আপনাদের মাধ্যমে আমির আলী তালুকদারের দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজিসহ সকল অনিয়ম দেশবাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।