সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি নিয়ে আজ মাঠে নামছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। ঢাকাসহ সব মহানগর ও জেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে তারা। রাজধানীতে আট স্থানে পালন করা হবে এ কর্মসূচি। এ সমাবেশ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি সব মহানগর ও জেলায় আবারও বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা আসবে।
নতুন কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র এক নেতা যুগান্তরকে বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি সব মহানগর ও জেলায় ফের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দশ দফার পাশাপাশি বিএনপিসহ সমমনাদের কর্মসূচির দিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে বিরোধী দলের ওপর হামলা ও পুলিশের জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এর সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টিও যুক্ত করা হতে পারে।
এদিকে আগের গণমিছিল, গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ-এ তিন কর্মসূচিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। কিন্তু সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল না। তাই যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি বিক্ষোভ সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়াতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। গত কর্মসূচিতে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক গণঅধিকার পরিষদ অংশ না নিলেও আজকে তারা থাকবেন। তবে জামায়াতে ইসলামী আনুষ্ঠানিকভাবে এদিন কোনো কর্মসূচি দেয়নি।
জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু যুগান্তরকে বলেন, জনগণের দাবি আদায়ে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু এসব কর্মসূচিতেও ক্ষমতাসীনরা নানাভাবে বাধা দিচ্ছে। সব বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও আমাদের এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। আজ ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশেও ব্যাপক উপস্থিতি হবে বলে আশা করি।
নয়াপল্টনসহ রাজধানীর আট স্থানে সমাবেশ : দুপুর ২টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান ও সেলিমা রহমান বিশেষ অতিথি থাকবেন।
বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, ঢাকা ছাড়া বিভিন্ন মহানগরে কেন্দ্রীয় ১১ নেতা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে বরিশালে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং রাজশাহীতে থাকবেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে গাজীপুরে বরকতউল্লা বুলু, কুমিল্লায় মো. শাহজাহান, সিলেটে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ময়মনসিংহে শামসুজ্জামান দুদু, রংপুরে আহমেদ আজম খান ও খুলনায় প্রধান অতিথি থাকবেন নিতাই রায় চৌধুরী। যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে যাবেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং ফরিদপুরে থাকবেন হাবিব উন নবী খান সোহেল।
বিএনপি ছাড়াও রাজধানীতে সমমনা দলগুলো সাত স্থানে সমাবেশ করবে। বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, বেলা ৩টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন সড়কে ১২-দলীয় জোট, বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, দুপুর আড়াইটায় পূর্ব পান্থপথের এফডিসি সংলগ্ন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বেলা ১১টায় আরামবাগে মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম ও বাবুল সর্দার চাখারীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের (পূর্ব প্রান্তে) সামনে চার দলের গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য সমাবেশ করবে। এছাড়া ১৫ সংগঠনের ‘সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট বেলা ১১টায় পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বলে জানায় জোটের সমন্বয়কারী মুহাম্মদ সাইদুর রহমান।’