জাতীয়

পৃথিবীর অন্য কোথাও এমন হলে গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল হতো : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দৈনিক প্রথম আলো যা করেছে, পৃথিবীর অন্য কোথাও এমনটি ঘটলে সেই গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল হতো। একটি শিশুর হাতে ১০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে স্বাধীনতার মর্যাদা ক্ষুন্ন করা কি ঠিক হয়েছে?

তিনি বলেন, ‘অপরাধকে ভুল বলে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। এটা জঘন্য অপরাধ। উন্নত দেশে, গণতান্ত্রিক দেশে শিশুদের এভাবে উপস্থাপন করলে সেই গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। সেখানে শেখ হাসিনা অনেক ধৈর্যশীল।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করেন। কিন্তু এ অপরাধের জন্য কি তারা (প্রথম আলো) কোনো ক্ষমা চেয়েছে? যে জঘন্য অপরাধ তারা করেছে তার শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত। বিশ্বনেতারা যখন শেখ হাসিনা সরকারকে প্রশংসা করছে তখন বাংলাদেশের এক শ্রেণির মিডিয়া সরকারকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ করছে।

বিএনপি সাংবাদিকদের জন্য মায়া কান্না করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের যারা হত্যা করেছে, সেই বিএনপি এখন তাদের জন্য মায়া কান্না করে। সাংবাদিকদের জন্য যা করেছে সব প্রধানমন্ত্রী করেছে। সাংবাদিককে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেবরা সাংবাদিকদের স্বাধীনতার জন্য মায়া কান্না করেন। এদেশের অসংখ্য সাংবাদিক হত্যার হোতা হচ্ছে তারা (বিএনপি)। সংবাদপত্রের নবম ওয়েজ বোর্ড, কল্যাণ ট্রাস্টসহ যা কিছু করেছেন, সবকিছুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন।

দৈনিক প্রথম আলো স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে দেশকে বিশ্বের সামনে কটাক্ষ করেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অনেক কিছু সহ্য করি। বলা হয় সাংবাদিকের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা, গণ্যমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি। অসংখ্য সাংবাদিককে যারা হত্যা করেছে, তারা আজ কী করছে?

তিনি বলেন, ‘ইতিহাসের অবাঞ্ছিত সত্যের পুনরাবৃত্তি ঘটে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের রাজনীতি অন্যান্য দেশের রাজনীতির মতো নয়। দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী আপসে আসতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনা বেগম জিয়াকে টেলিফোন আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো যখন মারা যায়, তখন সময় নিয়ে পুত্রহারা মাকে সান্তনা দিতে প্রধানমন্ত্রী গেলেও সেই দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। তোমরা যাকে মারতে চেয়েছ, সেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শোক প্রকাশ করতে তোমাদের কাছে গিয়েছে। এটাই বঙ্গবন্ধু কন্যার উদারতা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা আন্দোলন করে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে পারে নাই। শেখ হাসিনার উদারতার কারণে বেগম জিয়া আজ নিজের বাড়িতে আছেন। তার সাজা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে রেখেছেন। তারা প্রতিনিয়ত দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানের সঙ্গে অনলাইনে মিটিং করে যাচ্ছেন। এটাও বাংলাদেশে হচ্ছে, এরপরও তারা বলছেন বাংলাদেশে তাদের স্বাধীনতা নেই। বাংলাদেশের রাজনীতি আর বিশ্বের অন্য দেশের রাজনীতি এক নয়।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আবার গণঅভ্যুত্থানের হুঙ্কার দিচ্ছে। অথচ তাদের গতকালের সমাবেশে পাঁচ শ’ থেকে সাত শ’ লোকের উপস্থিতি হয়েছে। রোজার দিনে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে বিএনপি। জনগণ যে আন্দোলনে থাকে না, সেখানে গণঅভ্যুত্থান হয় না। তাদের নেতাকর্মীরা হতাশায় ভুগছেন। পথ হারিয়ে পদযাত্রা-মানববন্ধনে পরিণত হয়েছে তাদের কর্মসূচি। তাদের গণঅভ্যুত্থান আর দাঁড়াতে পারবে না।

নির্বাচন নিয়ে বিএনপি গুজব তুলছে- এ কথা জানিয়ে কাদের বলেন, নির্বাচন দেবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের আগে বা পরে হোক তাদের ভরাডুবি অনিবার্য। লন্ডনের ফরমায়েশ এদেশে চলবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।

এর আগে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

সূত্র : বাসস