আন্তর্জাতিক

প্রথমবারের মতো ইসরাইলের ভেতরে ঢুকল হামাস

গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘেঅষণা করেছে। তারা প্রথমবারের মতো ইসরাইলের কয়েকটি শহরে ঢুকে ইসরাইলি সৈন্য ও সামরিক যান জব্দ করার ঘোষণা দিয়েছে। এর জবাবে ইসরাইলও গাজায় হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে।

আজ শনিবার এক বিবৃতিতে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ বলেন, শনিবার সকালে ইসরাইলে পাঁচ হাজার রকেট বর্ষণের মাধ্যমে ‘অপারেশন আল-আকসা স্ট্রম’ শুরু হয়েছে। ইসরাইেও গাজা থেকে অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করেছে।

সকল ফিলিস্তিনিকে ইসরাইলের মোকাবেলায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে দেইফ বলেন, ‘আমরা বলছি যে যথেষ্ট হয়েছে।’

হামাস জানিয়েছে, তারা অভিযানের প্রথম ২০ মিনিটে ইসরাইলে পাঁচ হাজারের বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে।

ইসরাইলি ব্রডকাস্টিং অথোরিটি জানিয়েছে, হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের সেরতের একটি থানার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। এ সময় গুলিবিনিময়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

গাজা উপত্যকা থেকে আল জাজিরার ইয়মনা আলসাইয়েদ বলেন, সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে ইসরাইলি সৈন্যদের অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘গাজার রাস্তায় রাস্তায় সামরিক যানবাহন দেখা যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি তরুণরা আনন্দে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।’

তিনি বলেন, ‘এবার ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া অন্য রকম দেখা যাচ্ছে। গাজাকে আগে কখনো এত শক্তিশালী মনে হয়নি। গাজার ইতিহাসে এই প্রথম তাদের সৈন্যরা ইসরাইলি কোনো শহরে প্রবেশ করল, সশস্ত্র সংঘাতে নিয়োজিত হলো।

ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলি সামরিক যান গাজায় নিয়ে যাওয়ার ভিডিওও দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।

আল জাজিরার আলী হাশেম বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোতে গাজায় বন্দী হিসেবে ইসরাইলি সৈন্যদের নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, হামাস কমান্ডার সালেহ আল-অ্যারোইরি বলেছেন যে এই অভিযানের লক্ষ্য আল-আকসা মসজিদ রক্ষা করা এবং একই সময় বন্দীদের মুক্ত করা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত এই খবর পাচ্ছি যে ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি সৈন্যদের কব্জা করেছে। এটা এই অভিযানের একটি চূড়ান্ত পর্যায় হতে পারে। এসব ইসরাইলির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্ত করা যেতে পারে। এই অভিযানের এটা অন্যতম লক্ষ্য হতে পারে।

ইসরাইলের জরুরি অবস্থা ঘোষণা
ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট গাজা উপত্যকার ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। হামাসের হামলায় এক নারী নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছে বলে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ইসরাইল জানিয়েছে, তারা তাদের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে।

উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই হামলা হলো। ইসরাইল ২০০৭ সাল থেকে গাজার ওপর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে কয়েক দফা যুদ্ধও হয়েছে।

সূত্র : আল জাজিরা, আরব নিউজ, বিবিসি এবং অন্যান্য