প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে আদালত অবমাননামূলক ভাষা ব্যবহার করার ঘটনা ব্যাখ্যা দিতে বিএনপিপন্থি আইনজীবী জোটের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদলকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এই চার সপ্তাহ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের কোনও বেঞ্চে তারা মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না বলেও আদেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, দুই আইনজীবীর ব্যাখ্যা যদি সন্তোষজনক না হয়, তাহলে তাদের আরও বড় সাজা হতে পারে।
এদিন আদালতে দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদলে পক্ষে সময় আবেদন করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।
প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর এডহক কমিটির প্যাডে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি দেন অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল।
সেই চিঠিতে বলা হয়, দেশে একটি অনির্বাচিত, জবাবদিহিহীন এবং অস্বচ্ছ ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। এর ফলে প্রজাতন্ত্রের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। জনগণ নজিরবিহীন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ তামাশার সংসদে সদস্য নির্বাচন করতে যাচ্ছে। এর প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হিসেবে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
এমন একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে আইনজীবী, জনগণ স্বাধীন, বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা রাখছে। আশা করছি মানবাধিকার রক্ষাকারী হিসেবে বিচার বিভাগ কার্যকরভাবে ভূমিকা পালন করবে। পুলিশ এবং বিচার বিভাগকে উভয়ই সরকারের ফ্যাসিবাদী নিপীড়নের সহায়ক হয়ে উঠেছে। সাধারণ নাগরিকদের প্রাপ্য জামিন আবেদন না মঞ্জুর এবং দ্রুত গতিতে বিচার পরিচালনা করা ন্যায়বিচারকে কবর দেয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, আদালত বর্জন কর্মসূচি চলাকালে মামলা সংশ্লিষ্ট যেসব আইনজীবী শুনানিতে অংশ নিতে অথবা নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না, সেসব মামলার জন্য পরবর্তী কার্যক্রম ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হোক। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের অনুপস্থিতে মামলা খারিজ বা বিরূপ আদেশ দেয়া উচিত হবে না।
চিঠিতে আদালত অবমাননাকর এমন ভাষা ব্যবহার করা হয়। তাই আদালত অবমাননার ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে তলব করা হয় তাদের।